-->
শিরোনাম
ভ্যানগার্ড পাঠক সমাজের মানববন্ধন

নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছেন সাংবাদিকরা

নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছেন সাংবাদিকরা

নওগাঁর পতিসরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীর উৎসবে সাংবাদিকদের দাওয়াত দিয়ে অসম্মান করার অভিযোগে প্রশাসনের সকল সংবাদ বর্জনের ঘোষণার পর এবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন নওগাঁর সাংবাদিকরা।

 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক জরুরি সভার পর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শফিক ছোটন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়।

 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁর পতিসরে এবার জাতীয়ভাবে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও নওগাঁ জেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসবের উদ্বোধনী দিন সোমবার (৮ মে) সেখানে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সাংবাদিকগণ সাংবাদ সংগ্রহ করতে আসেন। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় এই যে, আয়োজক কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে সাংবাদিকরা অসম্মানিত হন।

 

সেদিন উপস্থিত সবার জন্য আসনের ব্যবস্থা থাকলেও সাংবাদিকদের বসার কোনো আসন ছিল না। ফলে বাধ্য হয়েই মাটিতে বসেই অনুষ্ঠান কাভার করতে হয় গণমাধ্যম কর্মীদের। তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধানে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আয়োজকদের সাথে যোগাযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। উল্টো তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্বব্যবহার করেন। এ নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ তৈরি হয়।

 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ৮ মে’র ঘটনায় পরদিন (৯ মে) রাত ৯টায় নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। একই সাথে রবীন্দ্র জয়ন্তীর সমাপনী অনুষ্ঠানসহ জেলা প্রশাসনের সকল ধরনের অনুষ্ঠান ও সংবাদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের আকার ধারণ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবারও নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কায়েস উদ্দীন। রবীন্দ্র জয়ন্তী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের অসম্মান করার ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে একটি আন্দোলন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।

 

সভায় গৃহীত কর্মসূচিগুলো হলো, আগামী তিন দিনের (১২ থেকে ১৪ মে) মধ্যে রবীন্দ্র্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠানের স্থানীয় আয়োজক নওগাঁ জেলা প্রশাসককে দু:খ প্রকাশ, ক্ষমা প্রার্থনা, ঘটনার সম্মানজনক সমাধান ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানানো হয়। দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। স্মারকলিপিতে প্রস্তাবিত দাবি আদায় না হলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভাসহ বিভিন্ন কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণের হুশিয়ারী দেওয়া হয়। নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের গৃহীত এসব আন্দোলন কর্মসূচিতে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার প্রগতিশীল সাংবাদিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সুধীজনদের একাত্মতা প্রকাশ ও অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মাসিক ভ্যানগার্ড পাঠক ফোরাম এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। কর্মসূচিতে বক্তারা পতিসরে সাংবাদিকদের অসম্মান করার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের প্রতি দাবি করেন তারা।

 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাসদের নওগাঁ জেলা সমন্বয়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল, নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কায়েস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শফিক ছোটন, নওগাঁ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল নয়ন ও অন্যান্যরা। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রতন শাহা রঘু।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version