ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিভিন্ন যাত্রীবাহী পরিবহনে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে পরিবহন শ্রমিকরা।
রোববার দুপুরের পর নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পাশেই চলছিল বিভিন্ন যাত্রীবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজি।
স্থানীয় চাঁদাবাজরা তিশা পরিবহনের একটি বাসে যাত্রী উঠানোর সময় তিশা বাস হতে চাঁদা দাবি করলে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিশা বাসের স্টাফদের সঙ্গে শুরু হয় বাগবিতন্ডা।
তিশা বাসের স্টাফদের সঙ্গে স্থানীয় চাঁদাবাজদের তর্কবির্তক দেখে অন্য বাসের শ্রমিকরা এগিয়ে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় সংঘবদ্ধ হয়ে শ্রমিকরা তিশা বাস ও অন্য কোম্পানির বাস দিয়ে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ি ব্যারিকেট দিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সৃষ্টিয় ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্ক ও তীব্র যানজটের কারণে সাধারণ যাত্রীরা সময়মতো স্থানীয় গন্তব্যে না পৌঁছার ভয়ে ভোগান্তি ও অস্বস্তি হয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কাঁচপুর হাইওয়ে থানার টিআই ইব্রাহীম ঘটনা স্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের নিকট থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে স্থানীয় চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে পরিবহন শ্রমিকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসের দেয়া ব্যারিকেট ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পরিবহন শ্রমিক বিক্ষোভকারীদের সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় রোববার দুপুরের পর ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রী পরিবহন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর অতিক্রম করার সময় কাঁচপুর হাইওয়ে থানার সামনে স্থানীয় চাঁদাবাজরা বিভিন্ন গাড়ি হতে জোরপূর্বক চাঁদা উত্তোলন করে। স্থানীয় চাঁদাবাজরা চাঁদা উত্তোলনের সময় পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাগবিতন্ডা ও মারধর করে।
এরই ধারাবাহিকতায় পরিবহন শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে জানা যায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের (রেজি: নং ১৭২৪) এর অন্তর্ভুক্ত নারায়ণগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং ২৩০২) এর সোনারগাঁ কাঁচপুর ইউনিয়ন শ্রমিক ইউনিয়ন শাখা ও ঢাকা সিলেট মহাসড়ক শ্রমিক ইউনিয়ন শাখার ব্যানারে কাঁচপুর স্ট্যান্ড এলাকায় দুটি স্পটে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ঢাকা হতে ছেড়ে আসা বিভিন্ন যাত্রীবাহী পরিবহন হতে রশিদের মাধ্যমে ৫০ টাকা করে প্রকাশ্যে জোরপূর্বক ভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করছে এ সংগঠনের চাঁদাবাজরা।
আরো জানা যায় জিয়া নামের একজনের নেতৃত্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের দুটি স্থানে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পরিবহন ইউনিয়নের ব্যানারে চলে রশিদের মাধ্যমে চাঁদা উত্তোলন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে মারধরসহ এমন কি হয়রানিমূলক গাড়ি আটকে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার টিআই ইব্রাহিম বলেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তিশা পরিবহনের একটি বাসে কাঁচপুর হতে যাত্রী উঠানোর সময় কে বা কারা ৫০ টাকা চাঁদা দাবি করাকে কেন্দ্র করে বাস পরিবহন শ্রমিকরা মহাসড়কে বাস দিয়ে ব্যারিকেটের সৃষ্টি করে। তবে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে বাস চলাচল স্বাভাবিক করি।
তিনি বলেন চাঁদাবাজদের ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। চাঁদাবাজদের হাতেনাতে ধরতে পারলে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য