দেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোপে যেতে শুরু করেছে যশোরের শার্শার বিষমুক্ত হিমসাগর আম। শার্শা উপজেলার বাইকোলা গ্রামের আমচাষি আবু নাঈমের আম বাগান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১ টন আম এসিআই লজিস্টিক কোম্পানির মাধ্যমে ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়।
এ বছর ফলন বেশি হলেও বাজার দরে খুশি নন আমচাষিরা। আবহাওয়া আর মাটির গুণাগুণের কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় শার্শায় আম আগেই পাকে। সে কারণে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আনুষ্ঠানিকতায় ৫ মে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, খিরসরাই, বৈশাখীসহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিপুক্ত নিরাপদ আম পাড়া শুরু হয়। প্রথম হিমসাগর আম পাড়া শুরু হয়েছে।
এই হিমসাগর আম রাজধানী ঢাকাসহ দেশে ও বিদেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা। আগামী ১ জুন থেকে শুরু হবে আমের রাজা ল্যাংড়া আম ভাংগা। এ বছর প্রথমবারের মতো শার্শায় বিষমুক্ত সুস্বাদু নিরাপদ মোট ১শ টন আম রপ্তানি হবে ইউরোপের বাজারে। প্রথম দফায় ১ টন আম ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়েছে।
আম চাষি আবু নাঈম জানান, এ বছর তিনি ৩ একর জমিতে হিমসাগর আমের আবাদ করেছেন। এবার আমের ফলন বেশি তবে বাজারে দাম ভালো না পাওয়ায় খুশি নন তিনি। এসিআই লজিস্টিক কোম্পানি মাধ্যমে প্রথম দফায় তার বাগান থেকে ১ হাজার কেজি হিমসাগর আম ইউরোপে রপ্তানির জন্য ক্রয় করেছে। দাম বেশি হওয়ায় তিনি এখন খুব খুশি।
তার বাগান থেকে প্রথম আম সুইডেনে গেলেও পর্যায়ক্রমে ল্যাংড়া আম জার্মান, ফ্রান্স, ইতালিসহ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
আম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসিআই লজিস্টিকের প্রতিনিধি হাদিউজ্জামান শাহিন বলেন, অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে মণে ৮ কেজি ধল নিচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগ দোহাই দেখিয়ে কৃষকদের জিম্মি করে আমের দাম কম দিয়ে ঠকানো হচ্ছে।
এটা থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি যে, এই আম যাবে ইউরোপে। এতে কৃষকরা লাভবান হবে পাশাপাশি কৃষকের উন্নয়ন হবে।
শার্শার উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ কুমার জানান, এ বছর উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এ বছর প্রথমবারের মতো শার্শা থেকে হিমসাগর আম ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে ন্যাংড়া ও আম্রপালি মিলে মোট ১শ টন আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি হবে। ১৪ মে প্রথম দফায় এসিআই লজিস্টিক কোম্পানি লিমিটেড ১ টন হিমসাগর আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানির জন্য নিয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ মন্ডল, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী উদ্ভীদ সংরক্ষণ অফিসার ফরহাদ শরিফ, উপসহকারী কৃষি অফিসার আনিছুর রহমান, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হাদিউজ্জামান শাহিনসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য