-->

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগে টেন্ডার ছাড়াই কাটা হলো প্রায় শতবর্ষী ৩টি গাছ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগে টেন্ডার ছাড়াই কাটা হলো প্রায় শতবর্ষী ৩টি গাছ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলোর প্রায় শতবর্ষের ৩টি বিশালাকৃতির গাছ কেটেছেন টেন্ডার ছাড়াই। প্রকৌশলী দাবি করছেন (মোখা) থেকে বাঁচতেই গাছ কেটেছেন তিনি। শনিবার সরকারি নিয়মের বাইরে নির্বাহী প্রকৌশলীর একক সিদ্ধান্তে গাছগুলো কেটে নিলেন রেজাউল নামের এক ঠিকাদার।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকায় সড়ক বিভাগের পরিদর্শন বাংলো রয়েছে। সেখানে স্টাফদের বাসা ও বিভিন্ন প্রকার যান রাখা হয়ে থাকে। এই অফিসের ভেতরেই একটি পুকুরের চারপাশে পুরাতন ১টি তুলা গাছ এবং ২টি শীল কড়ুই কাঠ গাছ ছিল।

 

শনিবার সকাল থেকে এই ৩টি গাছ কাটা শুরু করে আরমান নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে কাঠুরেরা। শুধুমাত্র সড়ক বিভাগে নির্বাহী কর্মকর্তার লিখিত অনুমতিতে এই গাছগুলো কেটে ফেলা হয়।

 

এক্ষেত্রে জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি বা টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। মূল্য নির্ধারণ করতে জেলা বন বিভাগকে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি।

 

ঠিকাদার রেজাউল জানান, অনুমতি নিয়ে গাছগুো কেটেছি। ঢাকা বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়েছি। সব সড়ক অফিস জানে।

 

বন বিভাগ অফিস সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি সবরকম স্থাপনা বা অফিসের গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এরপর বন বিভাগে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদন সরেজমিন যাচাই-বাছাই করে গাছের মূল্য নির্ধারণ করে জেলা পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটির কাছে পাঠাবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিবেশ ও বন নিয়ন্ত্রণ কমিটি গাছ কাটার অনুমতি প্রদান করতে হবে।

 

এরপরই গাছ বিক্রয় নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। বন বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসএফএনটিসির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নিজস্ব অফিসে গাছ লাগালেও স্থাপনাটি সরকারি।

 

প্রত্যেক সরকারি স্থাপনা থেকে গাছ কাটতে নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। সব সরকারি অফিসে একই নিয়ম। কিন্তু তাদের অফিস থেকে আমাদের কাছে কোন প্রকার আবেদন করেনি।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ গাছগুলো টেন্ডার ছাড়াই কাটা হয়েছে স্বীকার করে বলেন, গাছগুলো অনেক পুরনো যেকোন সময় গাছ পড়ে মানুষের ঘরবাড়ি’সহ জীবনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এজন্য জলোচ্ছ্বাস (মোখা) থেকে বাঁচতেই গাছগুলো কাটা হয়েছে।

 

বনবিভাগের অনুমতি নিয়েছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, অনুমতি নেওয়া হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখ বলেন, সাংবাদিক এর মাধ্যমেই বিষয়টি ১ম জানতে পেরেছি।

 

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে অবশ্যই নিয়মের ভিতরেই কাটতে হবে, এছাড়া গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টির বিস্তারিত খোঁজ নিবেন বলে জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version