অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় ময়মনসিংহের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত বালু তোলায় সদরের খাগডহর ইউনিয়নের ঘুন্টিসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষজন কৃষিজমি ও বসতভিটা হারানোর শঙ্কায় আছেন। সেইসঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ।
স্থানীয়রা বলছেন, অবৈধভাবে নদে ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত বালু তুলছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। বালু পরিবহনের জন্য তারা ব্যবহার করছেন কয়েকশ ট্রাক। এসব ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট খানাখন্দে পরিণত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষজন ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জানা গেছে, সদরের খাগডহর ইউনিয়নের ঘুন্টি, কিসমত, তারাগাঈ, কল্যাণপুর, বাহাদুরপুর হয়ে বেগুনবাড়ি ঘাট এলাকা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদে একাধিক ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এসব বালু সড়কের পাশে রেখে চলছে বেচাকেনা।
এসব এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কিসমত এলাকার মো. আসাদ, মাসুম, রতন, জাহাঙ্গীর আলম, ইকবাল হোসেন, সুজন মিয়া, কল্যাণপুরের সজীব মিয়া ও সিরাজুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে দিনরাত বালু তুলে বিক্রি করছেন। বালু পরিবহনে কয়েকশ ট্রাক ব্যবহার করছেন তারা। ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এলাকার মানুষজন ধুলাবালুর কারণে বাড়িতে বসবাস করতে পারছেন না।
একইভাবে বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী উল্লেখ করে কিসমত এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ শরিফা আক্তার বলেন, ‘কারও কথা শোনেন না তারা। জোর করে নদে ড্রেজার বসিয়ে পাইপলাইন বাড়িঘরের ভেতর দিয়ে নিয়েছেন। বাধা দিলে মারধর করতে আসেন।’
কল্যাণপুর এলাকার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ বলেন, ‘সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ইজারা নেওয়া ছাড়াই দিনরাত বালু তুলছেন এসব ব্যবসায়ী। মাঝেমধ্যে প্রশাসন অভিযান চালায়। কিন্তু এরপর আগের অবস্থায় চলতে থাকে।’
দিনরাত ড্রেজার মেশিন চালু থাকায় এলাকার মানুষ শব্দে রাতে ঘুমাতে পারেন না উল্লেখ করে হারুনুর রশিদ বলেন, ‘ধুলাবালু বাতাসে উড়তে থাকায় মানুষের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়। অনেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। কিন্তু কোনও প্রতিকার নেই।’
এ বিষয়ে ড্রেজার মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার অনুমোদন নেই। তবে অন্যরা যেভাবে বালু তুলছেন, আমিও সেভাবে তুলছি।’নদে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা অবৈধ জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘শিগগিরই এসব অবৈধ ড্রেজার মালিকের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য