শেরপুর গারো পাহাড়ে লাম্পি স্কিন রোগে মারা যাচ্ছে গরু। আতংকে রয়েছেন পার্শ্ববর্তী ২ উপজেলার (ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী) কৃষকেরা। ইতোমধ্যেই নালিতাবাড়ী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগটি। আক্রান্ত হয়েছে অনেক গরু। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক ও খামারিগণ। রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত গবাদিপশুকে দ্রুত ভ্যাকসিন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল, পলাশীকুড়া, আন্ধারুপাড়াসহ কয়েক গ্রামের লোকজন জানান, সোমবার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওয়াকুড়া গ্রামের কৃষক আবু সাইদের প্রায় ৩০-৩২ হাজার টাকা মূল্যের বকনা বাছুর মারা গেছে।
এর আগে ৩ মে ওই গ্রামের কৃষক আবদুল মতিনের প্রায় ৮০-৮২ হাজার টাকা মূল্যের গাভিন গরু ও আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক মনিরুজ্জামান মানিকের প্রায় ৫০-৫২ হাজার টাকা মূল্যের ষাঁড় বাছুর মারা গেছে। ২ মাস আগে ভুক্তভোগী কৃষকরা গরুর শরীরে লাম্পি স্কিন লাম্পি রোগের উপস্থিতি পান।
আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি গুটি বের হয়ে শরীর ফুলে যায়, পচন ধরে ও রক্ত বের হয়। গরুর শরীরে জ্বর থাকে, খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। সঠিক চিকিৎসা না নিলেই গরু মারা যায়। রোগটি উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।
এই রোগ পার্শ্ববর্তী উপজেলা ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এতে বেশ কয়েকজন কৃষকের আক্রান্ত গরু মারা যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। তাই স্থানীয় কৃষকরা এখন আতঙ্কে রয়েছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পলাশীকুড়া গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি কৃষাণি মরিয়ম বেগম বলেন, আমার খামারে ১১টি গরু আছে। এর মধ্যে দেড় বছর বয়সি একটি ষাঁড় বাছুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে, এখনো সুস্থ হয়ে ওঠেনি। প্রায় ৬ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়েছে। খামারের বাদবাকি গরু নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
আন্ধারুপাড়া গ্রামের লালচাঁন মিয়ার তিনটি ষাঁড় গরু আক্রান্ত হলে চিকিৎসায় একটি সুস্থ হলেও বাকি দুটি ষাঁড় গরুর চিকিৎসা চলছে। ওই এলাকার কৃষক রুহুল আমীনের একটি, মুনসুর আলীর একটি ও পলাশীকুড়া গ্রামের কৃষাণি আম্বিয়া খাতুনের একটি গরুর চিকিৎসা চলছে।
কৃষকরা বলেন, লাম্পি স্কিন রোগ যাতে না ছড়ায় সেজন্য দ্রুত আক্রান্ত এলাকার গবাদিপশুকে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা দরকার।
নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফায়জুর রহমান বলেন, লাম্পি স্কিন রোগ মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। সরকারিভাবে এ রোগের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই। আক্রান্ত গবাদিপশু আলাদা করে মশারির ভেতরে রাখতে হবে। আক্রান্ত হওয়ার আগেই বেসরকারি কোম্পানির ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নালিতাবাড়ীতেও এ রোগ দেখা দিয়েছে। যেহেতু রোগটি মাছির মাধ্যমেই ছড়ায় সেহেতু পার্শ্ববর্তী উপজেলা হওয়ায় এখানেও ঝুঁকি বাড়ছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য