-->
শিরোনাম

যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, দেখার কেউ নেই

আবুল কাশেম, জামালপুর প্রতিনিধি
যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, দেখার কেউ নেই
ইসলামপুরে উলিয়া ঘাটের যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টর বোঝাই করা হচ্ছে

আবুল কাশেম, জামালপুর প্রতিনিধি:জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার উলিয়া ঘাটে যমুনা নদী থেকে এক শ্রেণির অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এ অবস্থা দেখার কেউ নেই। প্রতিদিন ৫০-৬০টি বালুবাহী টাক্টর দিয়ে বালু উত্তোলন করে ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন তারা।

 

জানা গেছে, উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া বাজার এলাকার শাহাদত হোসেন দুলাল ও রুহুল আমিন নামে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি উলিয়া রাজনগর নামক স্থানে যমুনা নদী জেগে উঠা চর থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

 

উলিয়া ঘাটের গ্রামীণ ব্যাংকের পশ্চিম পাশে রাজনগর নামক স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের দক্ষিণ পাশ থেকে শাহাদত হোসেন দুলালের ১০ জন শ্রমিক অবৈধভাবে ভেকু মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে বালু খনন করে ট্রাক্টর গাড়িবোঝাই করে বিক্রির উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছে। পাশর্^বর্তী স্থান থেকে রুহুল আমিনের শ্রমিক ভেকু মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে বালুবাহী গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

এলাকাবাসীর দাবি, প্রতিদিন কমপক্ষে ২শ গাড়ি বালি অবৈধভাবে উত্তোলন করে টাক্টর দিয়ে ইসলামপুর এবং মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন তারা। বালু উত্তোলনের মাধ্যমে বালুখেকোরা রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন তারা। অন্যদিকে সরকারের পানি উন্নয়ন রোর্ডের কয়েকশ কোটি টাকার ভাঙনরোধ প্রকল্প দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে।

 

এ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দা, মিনহাজ, রেজাউল, সুমন, আনোয়ার জানান, বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এলাকার খুবই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। প্রতিবাদ করতে গেলে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনেস্তা করে থাকেন তারা। তাই তাদের ভয়ে কেউ টুঁ শব্দ করার সাহস পায় না। সাকিল নামে এক কৃষক জানান, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নষ্ট হলেও দেখছে না কোনো স্থানীয় প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, কয়েকবার উপজেলা প্রশাসন বরাবর একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ হয়নি বরং বালুখেকোরা আমাদেরই ক্ষতি করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকে। তাই কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না বলে জানান।

 

এদিকে বালুখেকো শাহাদত হোসেন দুলাল সাংবাদিক দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে রাগান্বিত হয়ে বলেন, সাংবাদিক কি করতে পারবে? লিখে কিছু করতে পারলে করেন গা। আমরা স্থানীয় প্রশাসনসহ উপর মহলে ম্যানেজ করেই বালু তুলছি। বালিখেকো রুহুল আমিন বলেন, ভাই নিউজ করে কি হবে? সবাইকে দিয়েই বালুর উত্তোলন করে আসছি। আপনি আসছেন আমি যা পারি তাই দিই। আপনি নিউজ করিয়েন না।

 

এদিকে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন বলছে ভিন্ন কথা। ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আশরাফ আলী বলেন, বালু উত্তোলনকারীরা মনগড়া মন্তব্য করছেন। অতি শিগগিরই অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version