শুষ্ক মৌসুম ও কৃষকরা ইরি-বোরো চাষাবাদে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ কারণে বাসাবাড়িতে অল্প পাইপ বসানো টিউবওয়েলে পানি উঠে না।
অনেক টিউবওয়েলে গত ২ থেকে ৩ মাস থেকে একেবারেই পানি নেই। কিছু টিউবওয়েল শক্তি দিয়ে চাপ দিলে অল্প অল্প পানি ওঠে। এ কারণে দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী।
পানির অভাবে রান্নাবান্না, গোসলসহ নানা কাজের জন্য বিপাকে পড়তে হচ্ছে অনেককে। অনেকেই অন্যের বাড়ি ও স্থানীয় মসজিদ থেকে পানি নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করছেন।
উপজেলা ভীমপুর গ্রামের এক গৃহিণী বলেন, আড়াই মাস থেকেই আমাদের কলে পানি ওঠে না। রাস্তার পাশে ও বাড়ির দরজা না থাকায় হিরোইন খোরের ভয়ে কলের হ্যান্ডেল খুলে রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, বৃষ্টি হলেই কলে পানি ওঠবে তখন হ্যান্ডেল লাগাব। একই এলাকার খামারি রাব্বী বলেন, খামারে ১৫শ বয়লার মুরগি আছে টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় খুব বিপদে আছি।
জয়পুরহাট-হিলি রাস্তায় চলাচল করা (ভীমপুর) হিলি বাসস্ট্যান্ডে ছোট্ট চা-পুড়ির দোকানদার দুদু মিয়া বলেন, ৩০ টাকায় ৩ বার আগে ডামে পানি ভরে নিতাম এখন আমাকে একশ টাকা দিতে হয়।
টিউবওয়েলে সহজে পানি না ওঠার জন্য টাকা বেশি নেয় ছেলেটি। উপজেলা কেশবপুর আশ্রয়ণের গুচ্ছগ্রামের সরকারি বাড়িতে বসবাস করা দশটি পরিবারের জন্য ৬টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়।
গুচ্ছগ্রামে বাস করা স্কুলশিক্ষিকা বলেন, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ৫টি টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। যদিও একটিতে ওঠে অনেক মানুষ কষ্ট করে পানি তুলে অতি প্রয়োজনীয় কাজ করি। পাশেই পুকুরে ছোট-বড় সবাই গোসল ও কাপড় পরিষ্কার এবং অনেক দূর শ্যালো মেশিনের পানিও অনেকে ব্যবহার করে আসছি বলে জানান শিক্ষিকা।
এ ছাড়া গরম ও শুষ্ক মৌসুমের কারণে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল পানি শূন্য হয়েছে। অনেক মৎস্যচাষি শ্যালো মেশিনের সাহায্যে পুকুরে পানি সরবরাহ করছেন। এমনকি পাকা রাস্তার পিচ গলে যাচ্ছে। রিকশা-ভ্যান ও বাস চালকরা বলছেন, প্রয়োজন ছাড়া গরমে মানুষ ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছে, এ কারণে যাত্রী কম হচ্ছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, সব মৌসুমে পানির স্তর একরকম থাকে না। তবে পরিমাণ মাফিক পাইপ বসালে যেকোনো মৌসুমে টিউবওয়েলে পানির সমস্যা থাকবে না।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য