-->

মাগুরায় প্রথমবারের মতো বিক্রি হচ্ছে কাটা মুরগির মাংস

মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় প্রথমবারের মতো বিক্রি হচ্ছে কাটা মুরগির মাংস
মাগুরা শহরের নতুন বাজারে কেটে মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে

মাগুরায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে কেটে মুরগির মাংস বিক্রি। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ, যাদের একটা আস্ত মুরগি কেনার সামর্থ্য নেই তারা চাইলেই এখন ১০০ গ্রাম ২০০ গ্রাম মাংস কিনতে পারছে। মাগুরা শহরের নতুন বাজারে অবস্থিত মুরগি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

 

আর এ বিষয়ে তাকে সহযোগিতা করছেন অল্টারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট ইনেসিয়েটিভ (এডিআই) ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।

 

নতুন বাজারে অবস্থিত ওই মুরগির দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ২৫০ গ্রাম থেকে আধা কেজি মাংস নিতে বেশ ভিড় জমেছে। ছোট পরিবারের অনেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন আধা কেজি বয়লার ও সোনালি মুরগির মাংস। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে মাংস প্রস্তুত করায় চাহিদাও বাড়ছে বেশ।

 

এখানে বয়লার মুরগি পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি ধরে। সেখানে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি।

 

এছাড়া সোনালি মুরগি পিস হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। বিপরীতে কেটে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি দরে। দামের এতটা পার্থক্য হওয়ার কারণ হিসেবে দোকানদার জানিয়েছেন একটা মুরগি কাটার পর তার চামড়া, পশম ও পেটের ভেতরের নাড়িভুড়ি ফেলে দিলে মূল মাংস ৬০০ গ্রাম দাঁড়ায়। যে কারণে দামের এই পার্থক্য।

 

আধা কেজি মুরগির মাংস কিনতে আসা মো. শিমুল মোল্লা বলেন, একটা মুরগি দুই থেকে আড়াই কেজি ওজন যা আমার পক্ষে কেনা সম্ভব না। যে কারণে বেশ কয়েকদিন মুরগি কেনা হচ্ছে না।

 

হঠাৎ শুনলাম এই দোকানে কেটে মুরগির মাংস বিক্রি করছে। এখান থেকে নাকি ১০০ গ্রাম থেকে আধা কেজি যার যতটুকু লাগবে সে কিনতে পারছে যে কারণে আমি কিনতে আসলাম। আমি এখান থেকে আধা কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংস নিয়েছি।

 

মাংস কিনতে আসা অপর ক্রেতা মোহাম্মদ হিরু মিয়া বলেন, আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম এছাড়া মুরগির দাম বেশি ও বড় হওয়ায় কিনে খেতে পারি না। এই দোকান থেকে আধা কেজি মুরগির মাংস নিলাম এটা বউ বাচ্চা নিয়ে খাব।

 

মুরগি বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন জেলায় দেখেছি মুরগির মাংস কেটে বিক্রি করে।

 

এছাড়া আমার দোকানে অনেক কাস্টমার এসে ছোট সাইজের মুরগি খোজে। বড় মুরগি হওয়ায় তারা কিনতে পারে না। তাই আমি চিন্তা করি সকল শ্রেণির ক্রেতার চাহিদা পূরণ করার জন্য কেটে মুরগির মাংস বিক্রি করা যায় কিনা।

 

এ সময় আমাকে অল্টারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট ইনেসিয়েটিভ (এডিআই) ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কেটে মুরগির মাংস বিক্রি করার পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

 

তারপর থেকে আমি ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির মাংস কেটে বিক্রি করছি। অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ আসছে যারা ২৫০ গ্রাম থেকে আধা কেজি মাংস কিনে নিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন বেচা বিক্রি বাড়ছে।

 

অল্টারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট ইনেসিয়েটিভ (এডিআই) এর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. তুহিন মিয়া জানান, সকল শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে মুরগির মাংস আনার জন্য আমরা এ উদ্যোগে তাকে উৎসাহিত করেছি। পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে মাংসটা যাতে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় তার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা আমরা করে যাচ্ছি।

 

অল্টারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট ইনেসিয়েটিভ (এডিআই) মাগুরা শাখার সহকারী পরিচালক মো. আলীয়ার রহমান বলেন, সোনালি এবং ব্রয়লার মুরগি সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

 

নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের প্রোটিনের স্বাদ মিটানোর জন্য আমরা শহরের নতুন বাজারে প্রাণিসম্পদ বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করেছি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version