-->
শিরোনাম
অল্প পুঁজিতে দ্বিগুণ লাভ

মানিকগঞ্জে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা
মানিকগঞ্জে সূর্যমুখীর চাষ বেড়েছে।

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সূর্যমুখীর চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। অল্প পুঁজিতে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় দিন দিন সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। জেলার প্রতিটি উপজেলায়ই কমবেশি সূর্যমুখীর দেখা মিলছে। চলতি বছর ফলন ভালো হওয়ায় তাই চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সবুজের মাঝে হলুদ ফুল উঁকি দিচ্ছে।

 

 

সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। এটি তেলজাতীয় ফসল হলেও এই ফুল সবুজের মাঝে দেখলে মনে হয় যেন হাজারো সূর্য একসঙ্গে খেলা করছে। মাথার ওপর যখন সূর্যের আলো ঝলমল করে ঠিক তখনই হলুদ রঙের এক নীরব ইশারায় অপরূপ দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমিকদের মুগ্ধ করে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চাষিরা অনাবাদি জমিতে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন। চলতি বছর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। এ মৌসুমে ৪০ হেক্টর জমিতে এই সূর্যমুখীর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৩৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাষিদের প্রতি বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করতে খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। বীজ (সূর্যমুখী) বিক্রি করা যাবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে তেল উৎপাদন করলে বিঘাপ্রতি ১০ লিটার তেল পাওয়া যাবে। সূর্যমুখী তেল মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে এই ফুলের তেল হার্টের জন্য ভালো।

 

সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী এলাকার চাষি লিয়াকত মিয়া বলেন, আমি আমার বাড়ির পতিত জমিতে এ বছর সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। যে টাকা আমার খরচ হয়েছে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভ হবে, তবে আমি এই ফুলের বীজ বিক্রি না করে নিজ বাড়িতে তেল উৎপাদন করে খাব।

 

সদর উপজেলার দিঘি ইউনিয়নের ভাটবাউর গ্রামের চাষি আব্দুল হালিম বলেন, আমার এই ১৫ শতাংশ জমি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে হওয়ায় তেমন কোনো ফসল আবাদ করতে পারি না। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এ বছর সূর্যমুখীর আবাদ করেছি, ফলনও ভালো হয়েছে।

 

এই জমিতে যে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে আমার তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভ হবে। আমার দেখাদেখি অনেকেই এই তেলজাতীয় ফসল আবাদ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বীজ বিক্রি না করেও নিজেদের জন্য তেল উৎপাদন করে খেলেও বছরে অনেক টাকা সাশ্রয় করা যাবে।

 

কলেজশিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি বলেন, কয়েক বছর আগেও হাতেগোনা কিছু জায়গায় সূর্যমুখীর চাষ হতো। এ বছর প্রায় সব এলাকায় সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে। সূর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিনই লোকজন আসছেন। তারা ফুলের ছবি তুলছেন। আমরাও বন্ধুরা মিলে এই ফুলের সৌন্দর্য দেখতে এসেছি।

 

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, সূর্যমুখী তেলজাতীয় ফসল। এই ফসল আবাদের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। সূর্যমুখীর আবাদ এই জেলায় দিন দিন বাড়ছে। এই ফসলের বীজের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে দেশব্যাপী।

 

চাষিরা এই সূর্যমুখীর আবাদ করে নিজেদের পরিবারের ভোজ্যতেলের চাহিদাও মেটাতে পারবেন বলে আশা করছি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version