-->
শিরোনাম

গোপালগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোপালগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে

গোপালগঞ্জ জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। বোরো মৌসুমে এ জেলায় ৪ হাজার ৮৭৩ টন ৭০০ কেজি ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়েছে। সরকার মৌসুমের শুরুতে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার ধান বীজ, সার বিতরণ করে। তারপর এ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে কৃষক হাইব্রিড ধানের আবাদ করেন।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষককে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করে। এছাড়া কৃষি কর্মকর্তা ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষককে ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়ে ৬৮৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি করেন। এসব কারণে গোপালগঞ্জের কৃষক ৪ হাজার ৮৭৩ টন ৭০০ কেজি ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। খবর বাসসের।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপপরিচালক আ. কাদের সরদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও ফেলে না রেখে আবাদের আওতায় এনে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির আহব্বান জানান। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ আহব্বানে সাড়া দিয়ে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করি। বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলায় আমরা ৮০ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করি।

 

কৃষক ৮১ হাজার ২২৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেন। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টন ৮০০ কেজি। ৮১ হাজার ২২৯ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৭২২ টন ৫০০ কেজি ধানের ফলন পাওয়া গেছে। সেই হিসাবে গোপালগঞ্জ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৮৭৩ টন ৭০০ কেজি ধান বেশি উৎপাদিত হয়েছে।

 

ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ২০ হাজার ৯২৮ হেক্টরে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৬ টন ৯০০ কেজি, মুকসুদপুরে ১৩ হাজার ২৯১ হেক্টরে ৯১ হাজার ৩০৬ টন ১৭০ কেজি, কাশিয়ানীতে ১১ হাজার ৭২৫ হেক্টরে ৮৩ হাজার ১৮৮ টন ৮৮০ কেজি, কোটালীপাড়ায় ২৬ হাজার ৪২০ হেক্টরে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬৪ টন ৮০০ কেজি ও টুঙ্গিপাড়ায় ৮ হাজার ৮৬৫ হেক্টরে ৬৫ হাজার ২৯০ টন ৭৩০ কেজি ধান উৎপাদিত হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলায় প্রায় ৬২ হাজার হেক্টরে হাইব্রিড ধানের আবাদ হয়েছে। এ কারণে ধানের ফলন প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, কৃষকের আন্তরিকতার ও পরিশ্রমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ধান উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।

 

এ কৃতিত্ব আমাদের কৃষকের। তারা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ও তীব্র শীত উপক্ষো করে সোনার ফসল ফলিয়েছেন। এজন্য কৃষক ও কৃষানিদের প্রতি আমি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ কৃষক আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা রেখেছেন।

 

কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের মাচারতারা গ্রামের কৃষক মনিমোহন মধু বলেন, ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের উৎসাহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বিনামূল্যে প্রণোদনার বীজ সার দিয়েছে। আমাদের নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ৩৫টি উদ্বুদ্ধ করণ সভা করেছে।

 

এছাড়া ধান চাষে কৃষি কর্মকর্তা ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। তাই এত ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে। ফসল ফলিয়ে আমাদের লাভ হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানাই।

 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতের উচ্চফলনশীল ধানের চাষ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সম্প্রসারিত করেছে।

 

এছাড়া ব্রি হাইব্রিড ধান-৩ ও ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ হেক্টরে সাড়ে ৯ টন থেকে সাড়ে ১০ টন পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। কৃষক নতুন নতুন জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধি করায় এ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ধান ফলেছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version