-->
শিরোনাম
পাওনা বুঝে পায়নি গ্রাহকরা

শতাধিক মাল্টিপারপাসের কারণে সর্বশান্ত হাজারো পরিবার

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শতাধিক মাল্টিপারপাসের কারণে সর্বশান্ত হাজারো পরিবার

কুমিল্লা দক্ষিণাঞ্চলের লাকসাম, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার গ্রাহকের কয়েকশ কোটি টাকা বিগত ১০ বছর পার হলেও বুঝিয়ে দেয়নি শতাধিক মাল্টিপারপাস। টাকা আত্মসাৎ কর্মকর্তারা উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ মিলেছে।

 

সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ৪ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্রভাবে গজিয়ে উঠা মাল্টিপারপাস কর্মকর্তাদের বিপুল অর্থ আত্মসাতের ফলে কয়েক হাজার পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পথে বসে মানবেতর দিনযাপন করছে।

 

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের ৪ উপজেলার কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি পরিসংখ্যানে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক কিংবা বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা নিরূপণ করা আজও সম্ভব হয়নি। গত ১০ বছর যাবত এ অঞ্চলে সমবায় সমিতি পরিচালনায় সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে জেলা সমবায় অফিসার-জেলা নিবন্ধকসহ কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা লাপাত্তা মাল্টিপারপাসগুলোর সাথে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত।

 

ওইসব মাল্টিপারপাসে বিনিয়োগকারী হাজার হাজার গ্রাহক প্রতিনিয়ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা মাল্টিপারপাসের শাখা অফিসে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। বেশকিছু আর্থিক সমবায় প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা তাদের নিজস্ব অর্থ দিয়ে মাল্টিপারপাসের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিভিন্ন বিনিয়োগের নামে লোভনীয় অফারে এ ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল।

 

কিন্তু মাল্টিপারপাস নামক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এসবকিছুর মনিটরিংয়ে জেলা নিবন্ধক-জেলা সমবায় অফিসারের দায়িত্ব অতি মুখ্য হলেও রহস্যজনক কারণে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

 

সূত্রগুলো আরো জানায়, জেলা দক্ষিণাঞ্চলের উপজেলাজুড়ে ওইসব অবৈধ অর্থ লেনদেনকারী মাল্টিপারপাসগুলো বিগত ১০ বছর পূর্বে অজ্ঞাত কারণে বিনিয়োগকারী হাজার হাজার গ্রাহকের আমানতকৃত টাকার লভ্যাংশ দেয়া বন্ধ করে দিলে ৪টি উপজেলাজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়।

 

ওইসব বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা না দিয়ে ৪ উপজেলার বড় বড় মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠান নামে শতাধিক প্রতিষ্ঠান অফিস বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়।

 

এদিকে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে এফআইসিএল, সেবা হাউজিং, প্রিভেইল গ্রুপ, শাহজালাল মাল্টিপারপাস, আরসিএল, আলোড়ন মাল্টিপারপাস ও পপুলার গ্রুপ বন্ধ করে বিনিয়োগ ও আমানতকারী গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকগণ হামলা-ভাংচুর করে এবং আমানত সংগ্রহকারী পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে থানা এবং আদালতে মামলা দায়ের করলেও বিগত ১০ বছর যাবত স্থানীয় প্রভাবশালী গ্রাহকরা কোনো কোনো মাল্টিপারপাসের অধীনে থাকা বাড়ি, জায়গা, পরিবহন ও প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক ঋণগ্রহিতাদের ব্লক সমন্বয় ও অফিস দখল করে তাদের সম্পদ কিংবা জমাকৃত বিনিয়োগের টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিফল হয়েছেন ওইসব চক্রের সদস্যরা।

 

এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা রাজনৈতিকভাবে চাপে আছি। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ করতে পারছি না।

 

ইতিমধ্যে উপজেলা ৪টির বন্ধ হওয়া অভিযুক্ত মাল্টিপারপাসগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা ম্যাজিস্ট্র্রেটকে পত্র দেয়া হয়েছে, প্রশাসনিক সহযোগিতা না পাওয়ায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version