-->
শিরোনাম

মধুটিলা ইকোপার্কে বন্যহাতির তান্ডব, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা

শেরপুর প্রতিনিধি
মধুটিলা ইকোপার্কে বন্যহাতির তান্ডব, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা
শেরপুরে মধুটিলা ইকোপার্কে এভাবে হাতি তাড়ায় স্থানীয়রা

শেরপুরের বিনোদন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্কে বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে মহুয়া রেস্ট হাউস, মিনি চিড়িয়াখানার বাউন্ডারি ওয়াল ও গোলাপ বাগানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তারা মধুটিলার পাশে একটি পুকুর পাড়ের ঘন জঙ্গলে অবস্থান করেছে। বন্যহাতি সীমান্ত এলাকায় দফায় দফায় তান্ডব চালিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করায় গ্রামবাসীর মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে। স্থানীয়রা এর স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

 

এলাকাবাসীর সূত্র জানায়, নালিতাবাড়ী সীমান্তের গারো পাহাড়ি এলাকায় প্রায় দুই যুগ ধরে বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করে আসছে। গত এক সপ্তাহে কয়েক দফায় তান্ডব চালিয়ে মধুটিলা ইকোপার্ক ও আশপাশের এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি এবং মৎস্য খামারের ক্ষতি করেছে।

 

এলাকার সাধারণ মানুষ হাতি তাড়াতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। বর্তমানে কৃষকেরা বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার পর খাদ্যের সন্ধানে হাতির দল হানা দিচ্ছে ঘরবাড়ি ও কাঁঠাল বাগানে। একই সঙ্গে চলমান তাপপ্রবাহের তীব্র গরমে পানি পান করা ও গোসল করতে হাতিগুলো নেমে পড়ছে এলাকার মানুষের মৎস্য খামারে। এতে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেও তাদের জানমাল রক্ষা করতে পারছে না।

 

এদিকে, মধুটিলা ইকোপার্কে উত্তর পূর্বদিকে সীমানা প্রাচীর না থাকায় শনিবার রাতে ৪০-৫০টির মতো বন্যহাতি পার্কের ভেতরে ঢুকে পড়ে। পাকের ভেতরে মিনি চিড়িয়াখানার বাউন্ডারি ওয়াল ও গোলাপ বাগান ক্ষতিগ্রস্ত করে।

 

পরে সেখান থেকে তাড়া খেয়ে চলে যায় মহুয়া রেস্ট হাউসে। সেখানে গিয়ে রান্নাঘরের দরজা-জানালা ভেঙে তছনছ করে। এ সময় রেস্ট হাউসে রাত যাপন করা কেয়ারটেকার বাদশা মিয়া হাতির ভয়ে চিৎকার করলে পাশের গ্রামের শতাধিক মানুষ মশাল জ্বালিয়ে সেখানে গিয়ে হৈ-হুল্লোড় করে বাদশাকে উদ্ধার করে।

 

বেচে যাওয়া কেয়ারটেকার বাদশা মিয়া জানান, আমি ঘর থেকে বের হতে চেয়ে ছিলাম। কিন্তু হাতির দল চারদিকে ঘিরে ফেলেছে। পরে ঘর থেকে চিৎকার দিই এবং ফোন করলে মানুষজন এসে হাতি গুলোকে ধাওয়া দিলে কিছুটা সরে গেলে পরে আমি সেখান থেকে বের হই।

 

বুরুঙ্গা কালাপানি গ্রামের কৃষক ও মৎস্য খামারি উসমান আলী জানান, হাতির দল আমার মৎস্য খামার ক্ষতি করেছে। দীর্ঘদিন যাবত এমন তান্ডব চালালেও এর কোনো স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।

 

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যহাতির দল তান্ডব চালিয়ে পাকের মহুয়া রেস্ট হাউস, গোলাপ বাগান ও মিনি চিড়িয়াখানার বাউন্ডারি বেড়া ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। পরে আমরা হাতির পালকে তাড়িয়ে দিয়েছি। পার্কের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি।

 

এ ছাড়া স্থানীয় অধিবাসীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version