আসছে ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রায় ৭৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করেছেন মানিকগঞ্জের খামারিরা। এর মধ্যে জেলায় পশুর চাহিদা আছে ৩৫ হাজারের। হিসাবে ৩৮ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, ছোট-বড় সবমিলিয়ে জেলায় ৯ হাজার ৬৬৯টি খামার আছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে ৪৬ হাজার ৯৮টি গরু, ৩৮টি মহিষ, ২২ হাজার ছাগল, চার হাজার ৭২৯টি ভেড়া এবং ৮১টি অন্যান্য পশু। সবমিলিয়ে পশু প্রস্তুত ৭২ হাজার ৯৪৬টি। এর মধ্যে জেলায় চাহিদা রয়েছে ৩৫ হাজার ৩৮৩টির। হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকছে ৩৭ হাজার ৫৬৩টি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় যাবে এসব গবাদিপশু।
সদরের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বিজরী গ্রামে ৩০ বিঘা জমিতে ‘গ্রাম বাংলা’ নামে ডেইরি ফার্ম গড়েছেন প্রবাসফেরত সোনা মিয়া। তিন বছর ধরে ফার্মে গরু পালন করেন। বর্তমানে ফার্মে ২৬টি গরু ও ১৯টি মহিষ আছে। এর মধ্যে একটি গরুর ওজন ৩০ মণ। যার দাম চাইছেন ১০ লাখ টাকা। বাকি গরুগুলোর দাম আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার মধ্যে।
ফার্মে শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালন করেন বলে জানালেন সোনা মিয়া। তিনি বলেন, ‘গরু মোটাতাজা করতে কোনো প্রক্রিয়াজাত খাবার ব্যবহার করি না। সাধারণত ঘাস, ভুসি, খড় ও খৈল খাওয়ানো হয়।’
খামারে ২৬টি গরু ও ১৭টি মহিষ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি ঈদ বাজারে ভালো দাম পাব। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লাভ হবে।’
জেলার কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা হলে জানা গেছে, পশু মোটাতাজা করতে ধানের কুঁড়া, গমের ভুসি, কাঁচা ঘাস, খড় ও খৈল খাওয়ান তারা।
জেলা সদরের খামারি আকবর হোসেন বলেন, এবার গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। ফলে গরু পালন করতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। অধিকাংশ খামারির একই অবস্থা। তবে ভারতীয় গরু না এলে ভালো দাম পাব বলে আশা করছি।
জেলায় চাহিদার চেয়ে ৫৫ শতাংশ গবাদিপশু উদ্বৃত্ত রয়েছে জানিয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্বৃত্ত পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে। এখানকার খামারিরা ঘাস, খড়, ভুসি ও খৈল খাইয়ে পশু পালন করেন। আশা করছি, এবার ঈদে ভালো দাম পাবেন খামারিরা।’
জেলায় পশু খামারের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৬৯টি উল্লেখ করে মাহবুবুল ইসলাম আরো বলেন, ‘এর মধ্যে সাটুরিয়ায় দুই হাজার ৪২, সিংগাইরে দুই হাজার, ঘিওরে এক হাজার ২৬২, দৌলতপুরে এক হাজার ১৫৭, সদরে এক হাজার ৩০, শিবালয়ে এক হাজার ৮৮ ও হরিরামপুরে এক হাজার ৯০টি।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য