-->
শিরোনাম

তীব্র দাবদাহে পর্যটকশূন্য কক্সবাজার

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
তীব্র দাবদাহে পর্যটকশূন্য কক্সবাজার
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত

তীব্র দাবদাহে পর্যটকের আনাগোনা হ্রাস পেয়েছে কক্সবাজারে। বছরের এ সময়েও দেখা নেই বৃষ্টির। সমুদ্রসৈকত এখন অনেকটা ফাঁকা। সৈকতে পড়ন্ত বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্থানীয়দের পদচারণা থাকলেও নেই আগের মতো পর্যটক।

 

তীব্র গরম থেকে বাঁচতে সাগরপাড়ে স্থানীয়দের যাতায়াত আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। মুক্ত আকাশে খোলা গায়ে দক্ষিণা হাওয়ায় প্রশান্তির পরশ নিতে সন্ধ্যার পর স্থানীয় নারী-পুরুষ ও শিশুদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিচ অনেকটা ফাঁকা। যারা আছে তাদের মধ্যে ৮০/৯০ শতাংশ লোক স্থানীয় বাসিন্দা। মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ আছে দেশীয় পর্যটক। তবে বিদেশি পর্যটক একেবারে নেই বললে চলে।

 

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খাঁন জানান, প্রচন্ড গরম, তাই পর্যটকের দেখা নেই অনেকদিন ধরে। এমনকি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দিয়েও দেখা মিলছে না পর্যটকের। কক্সবাজার শহর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সাড়ে পাঁচশতাধিক হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস, রেস্ট হাউস ও আবাসিক হোটেলের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ রুম এখন খালি পড়ে আছে। সারা দেশ তীব্র দাবদাহে পুড়ছে, সে কারণে পর্যটকের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

 

এস আলম কাউন্টারের ম্যানেজার আবু বক্কর জানান, নানা কাজে বাধ্য হয়ে অনেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম যাচ্ছেন, অথচ ফিরতি যানবাহন কক্সবাজারে আসছে খালি। শতাধিক কোম্পানির বিলাসবহুল গাড়ি চলাচল করছে কক্সবাজার চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে প্রত্যক গাড়িতে একই অবস্থা।

 

পর্যটন সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, গরমের কারণে বিশেষ কাজ ছাড়া কেউ বাসাবাড়ি থেকে বেরই হচ্ছে না। এ কারণে পর্যটকের আশানুরূপ দেখা মিলছে না। তবে এটি সাময়িক। বৃষ্টি শুরু হলে সাগরের রৌদ্রমূর্তি দেখতে অনেকে ছুটে আসবেন কক্সবাজারে। তখন আবারো জমজমাট হয়ে উঠবে সৈকত নগরী কক্সবাজার।

 

কলাতলী পয়েন্টে একজন বিমা কর্মকর্তা লায়ন শফিকুর রহমান ও তার আরেক সহযোগী সুজিত কুমার দাশ এ প্রতিবেদককে বলেন, তীব্র গরম। তবুও ভালো লাগছে সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে আর বালুকাবেলায় মিলিয়ে যাচ্ছে। সাগরের বিশালতা ও দক্ষিণা বাতাসে সত্যি মন ভরে গেছে। আমরা এসেছি ঢাকা থেকে।

 

কিছুদূর গিয়ে দেখা হয় কুমিল্লার চান্দিনার ব্যবসায়ী শামসুজ্জামান ও তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা লুৎফাজ্জানের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে এক ছেলে দুই কন্যা। তারা উন্মুক্ত বিচে এদিক সেদিক আনন্দে ছুটাছুটি করছে। গরম তাদের ঘায়েল করতে পারছে না। ছেলে-মেয়েদের ছুটাছুটির দৃশ্য দেখে ছাতার নিচে বসে খুবই আনন্দ উপভোগ করছেন।

 

গ্রীষ্মের ছুটি পেয়ে স্কুল শিক্ষিকার অনুরোধে তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে এ ব্যবসায়ী পরিবার পরিজন নিয়ে চলে এসেছেন কক্সবাজার।

 

তিনি বলেন, হোটেল কিংবা শহর কোথাও গরমের তীব্র যন্ত্রণার কারণে ভালো লাগছিল না। কিন্তু বিচে এসে শান্তির ঠিকানা খুঁজে পাওয়া গেছে।

 

ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান বলেন, আশানুরূপ পর্যটক না থাকায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচ কর্মী, ও লাইফগার্ড় কর্মীরা এখন অলস সময় কাটাচ্ছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version