-->
শিরোনাম

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বাড়ছে কামার সম্প্রদায়ের

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বাড়ছে কামার সম্প্রদায়ের
ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। ছবিটি কুমিল্লার লাকসাম থেকে তোলা

কুমিল্লা দক্ষিণাঞ্চলে আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলাগুলোর বিভিন্ন হাটবাজারে জীবিকার তাগিদে দরিদ্র কামার শিল্পীরা বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর মাত্র ৩ সপ্তাহ বাকি নেই ঈদুল আজহার।

 

আগামী ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে প্রকৃতি বর্ষার আগমনী বার্তা জানান দিচ্ছে ঈদুল আজহা উপলক্ষে নানা পণ্যের বাজার পাগলা ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অপরদিকে গরু খামারি ও গরু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বেড়েই চলছে।

 

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলে কামার শিল্পীদের স্থানীয়ভাবে তৈরি করা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরা করতে ওইসব হাতিয়ার প্রয়োজন এটাই স্বাভাবিক। ফলে দা, বটি, চাপাতি, ছুরি, চাকু ও ধামা তৈরিসহ ওইসব পুরোনো দেশীয় অস্ত্রে শান দিতে ইতিমধ্যেই ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অঞ্চলের কামার শিল্পীরা। দিনরাত চলছে তাদের কোরবানির পশু জবাই যন্ত্রপাতি তৈরির এ কাজ।

 

সারাক্ষণ যেন ঢুং, ঢাং ও টুং টাং শব্দে মুখর কামার দোকানের আশপাশের এলাকা। এ অঞ্চলে বিশাল শিল্পের সঙ্গে জড়িত কামার সম্প্রদায়ের লোকজন লৌহ ও স্টিলসহ বিভিন্ন ধাতবদ্রব্য দিয়ে পশু জবাইয়ের প্রয়োজনীয় ওইসব দেশীয় হাতিয়ার তৈরির মাধ্যমে পূর্ব পুরুষদের এ পেশা আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তারা।

 

স্থানীয় কামার শিল্পীদের একটি সূত্র জানায়, জেলা দক্ষিণাঞ্চলের লাকসাম, লালমাই, নাঙ্গলকোট, বরুড়া ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র কোরবানি ঈদ আসলে এ পেশার মানুষদের একটু ব্যস্ততা বেড়ে যায়। অন্য সময় অর্থাৎ বছরের বেশির ভাগ সময় অলসভাবে কাটাতে হয় তাদের। এবার ঈদে বটি, দা, বড় ছুরি ও ধামা তৈরিতে ৩ থেকে ৪শ টাকা করে মজুরি নেয়া হচ্ছে।

 

আর তৈরি করা এসব সামগ্রী বিক্রি করবে ৫শ থেকে ৬শ টাকায়। গরু কাটার ছোট ছুরি বিক্রি ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে গরু কাটার ছোট ছুরির চাহিদা একটু বেশি রয়েছে। এবারের ঈদে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ওইসব মালামাল তৈরি করতে যেসব মালামাল প্রয়োজন তা বাজারে উচ্চ মূল্য।

 

ফলে তৈরিকৃত ওইসব দেশীয় হাতিয়ার বিক্রি করতে হবে বেশি দামে। আগের মতো এখন আর নতুন করে মানুষ ওইসব পণ্য কিনতে চায় না। কারণ ঘরে থাকা পুরোনো হাতিয়ারগুলো পুনরায় শান দিয়ে ধারালো করে নিচ্ছে বেশিরভাগ লোকজন।

 

জেলার দক্ষিণাঞ্চলের আরেকটি সূত্র জানায়, জেলার বরুড়ার আমড়াতলি ও গালিমপুর বাজার, লালমাই উপজেলার বিজয়পুর, লালমাই, বাগমারা, হরিশ্চর, ভুশ্চিবাজার, লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজার, মুদাফরগঞ্জ বাজার, বিজরা ও পাঁচথুবি বাজার, মনোহরগঞ্জ উপজেলার পোমগাঁও, বাইশগাঁও, হাসনাবাদ, লক্ষনপুর, খিলা, নাথেরপেটুয়া ও বিপুলাসার বাজার এবং নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা, মক্রবপুর, বক্সগঞ্জ, দোলখাঁর ও ঢালুয়া বাজারে কামার সম্প্রদায়ের তৈরি দেশীয় লৌহজাত যন্ত্রপাতির ব্যবসা বিগত কয়েক বছর যাবত ধরে জমে উঠেছে। ওইসব সম্প্রদায়ের লোকজন এলাকার চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকার হাট-বাজারগুলোতে ওইসব যন্ত্রপাতি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে।

 

এ ব্যাপারে জেলা দক্ষিণাঞ্চলের কামারশিল্পী সম্প্রদায়ের একাধিক নেতার মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version