-->
শিরোনাম

গোদাগাড়ীতে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রিন চেরি চাষে সাফল্য

অজয় ঘোষ, রাজশাহী
গোদাগাড়ীতে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রিন চেরি চাষে সাফল্য
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কৃষক আবেদ আলীর গ্রিন চেরির বাগান

সবুজ রঙের ফল, দেখতে বাঙ্গীর মতো, গাছের পাতা অনেকটা রক মেলনের মতো, ফলটি খেতে খুবই সুস্বাদু মিষ্টি। এই ফলটির নাম গ্রিন চেরি। বরেন্দ্র অঞ্চল রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এখন গ্রিন চেরির চাষ হচ্ছে।

 

উপজেলার গোলাই এলাকাই এ গ্রিন চেরির চাষ করেন কৃষক আবেদ আলী। আবেদ আলী মালচিং পদ্ধতিতে ৪০ টি গ্রিন চেরি ফলের গাছ লাগিয়েছেন। গাছে এখন তার ফল ঝুলছে। দূর-দূরান্ত থেকে এ ফল দেখতে আসছে অনেক কৃষক। তার এ গ্রিন চেরি ফল দেখে অনেক কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে এ ফল চাষের জন্য।

 

গ্রিন চেরি বাঙ্গী, তরমুজ, রকমেলন গোত্রের উদ্ভিদ। ফলটি খুবই সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও এন্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। শরীরে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ব্যালেন্স তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে। খোশাসহ ফলের সম্পূর্ণ অংশ খাওয়া যায়।

 

গ্রিন চেরি ফলটি সারা বছর চাষ করা যায়। তবে শীতকালে ফেব্রæয়ারির মাঝামাঝি (ফাল্গুনের ১ম সপ্তাহে) বপন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বপনের ২০ থেকে ২৫ দিনের মাথায় ফুল আসে। ৪০-৪৫ দিনের মাথায় ফল ধরে। ৭০-৭৫ দিনে ফল সংগ্রহ করা যায়। ফলের গড় ওজন ৭৫০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হয়। একটি গাছে ১৫-২০টি ফল ধরে।

 

কথা হয় কৃষক আবেদ আলীর সাথে। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে আমিই প্রথম এ গ্রিন চেরি ফলের চাষ করি। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার অতনু সরকার আমাকে এ ফল চাষ করার জন্য আগ্রহী করে তোলেন। তিনি আমাকে গ্রিন চেরি ফলের বীজ সংগ্রহ করে দেন। এবারই প্রথম ৪০টি গাছ লাগিয়েছি। গাছে ফল এসেছে। অনেকে আমার এ ফল চাষ দেখতে আসছে।

 

আবেদ আলী বলেন, আমার বাগান দেখে অনেকেই এ ফল চাষ করবে বলে আমাকে জানিয়েছে। এ ফল মাটিতে ও মাচায় চাষ করা যায়। আমি মাচায় চাষ করেছি। প্রতিটি গাছে ১৫ থেকে ২০টি করে ফল এসেছে। একটি ফলের ওজন ৬শ’ গ্রাম থেকে ৮শ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়েছে। ফলটি খেতে খুবই সুস্বাদ ও মিষ্টি। তরমুজ ফলের চাইতে মিষ্টি। খেতে খচখচে ভাব, তরমুুজের মতো নরম নয়।

 

খোশাসহ ফলের সম্পূর্ণ অংশ খাওয়া যায়। ফলটি ভিতর বাহির সবুজ। ফলটি কাটলে ভেতরে বীজের চারপার্শ্বের হালকা হলুদ।

 

কৃষক আবেদ আলী আরো জানান, আগামীতে তিনি ১ বিঘা জমিতে গ্রিন চেরি চাষ করবেন।

 

আবেদ আলীর জমিতে চাষ করা গ্রিন চেরি ফল দেখতে আসা কৃষক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এটা মেলন জাতের ফল। এর আগে আমি রক মেলনের চাষ করে ছিলাম। তাই গ্রিন চেরি ফলটি দেখতে এসেছি। অল্প পরিসরে চাষ করব। যদি বাজারজাত করা যায় তাহলে ব্যাপকভাবে এই ফল চাষ করব।

 

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার অতনু সরকার বলেন, এই ফলটি রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে চাষের জন্য উপযোগী। ফলটি শীতকালে মাটিতে ও গ্রীষ্মকালে মাচায় চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এ ফল চাষে কৃষকেরা লাভবান হবে। কৃষি অফিস কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে এ অঞ্চলে গ্রিন চেরি ফল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version