ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কোরবানির পশুসহ গবাদিপশুতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে লামপিং স্কিন ডিজিজ নামের রোগ। রোগাক্রান্ত গবাদিপশু কোরবানিতে অযোগ্য হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন সাধারণ কৃষক ও খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, গত মে মাসে লামপিং স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত গবাদিপশু ৬৭৮টির মধ্যে সরকারি তালিকায় ৮টি পশুর মৃত্যু রেজিস্টার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আক্রান্ত ও মৃত পাঁচগুণের বেশি হবে বলে মনে করেন গবাদিপশুর ওষুধ বিক্রির দোকান মালিকরা।
স্থানীয় একাধিক গ্রামীণ প্রাণি চিকিৎসক (কোয়াক ডাক্তার) জানান, এ উপজেলায় প্রায় ৭০-৮০ জন কোয়াক ডাক্তার রয়েছে। তারা এক মাসে গড়ে প্রতিজনে ৪০টির বেশি লামপিং স্কিন ডিজিজের আক্রান্ত পশুর চিকিৎসা করেছেন।
এর মধ্যে বড়হিত ইউনিয়নের চরপুম্বাইল গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার দু’লাখ টাকা মূল্যের একটি ষাঁড় ও ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নের চরহোসেনপুর গ্রামের লাল মিয়ার ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরুসহ আরো কয়েকটি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
তারা আরো জানান, রোগটি নিয়ে সাধারণ কৃষক ও খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। কারণ আক্রান্ত পশুগুলো কোরবানির হাটে বিক্রি করা যাবে না। কোরবানির জন্য পালন করা গবাদিপশুর সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় কম এবং রোগাক্রান্ত হওয়ায় কারণে দাম একটু বেশি পড়বে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. পল্লব বৈশ্য জানান, গত মে মাসে হাসপাতালে আগত ও হাসপাতাল কর্মরতদের তথ্যের ভিত্তিতে ৬৭৮টি আক্রান্ত ও ৮টি পশু মৃত্যু বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবুর রহমান জানান, লামপিং স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত পশুর কোনো নির্দিষ্ট টিকা নেই। তবে এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে একই পরিবারভুক্ত অন্য একটি টিকা দিয়ে শতকরা ৬০-৬৫ ভাগ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
বিগত বছরগুলোর হিসেবে চাহিদা আছে ৯ হাজার ৮শ পশুর। এ বছর ৯ হাজার ৯০৭টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে; তাই কোনো প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনটিটিউট (বিএলআরআই) টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। আশা করছি দ্রুত তম সময়ের মধ্যে এর একটি সুফল পাওয়া যাবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য