-->
শিরোনাম
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

ভাঙনের হুমকিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা

আ. রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল
ভাঙনের হুমকিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে

টাঙ্গাইলের যমুনা নদীতে কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে। এতে করে জেলার ভ‚ঞাপুরে অবৈধভাবে নদীর পাড়ে বাল্কহেড ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আনা বালু আনলোড করছে বালু ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া সন্ধ্যা হলে বালু ব্যবসায়ীরা চরাঞ্চলের বালু কেটে অবাধে বিক্রির মহোৎসবে মেতে ওঠে। গাইড বাঁধের কাছে ড্রেজার বসিয়ে বালু আনলোডের ফলে গেল বছরের মতো এবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে।

 

শুধু তাই নয়, আনলোড করার মেশিন ড্রেজারগুলোর কারণে গত বছর ভয়াবহ বন্যায় ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা জিওব্যাগ যমুনা নদী গর্ভে ধসে যাচ্ছে। ফলে হুমকিতে রয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা-আধা পাকা সড়ক, নদী পাড়ে বসত-বাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। ইতিমধ্যে ভাঙন শুরু হওয়ায় একটি পাকা সড়ক ভাঙনের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের- গোবিন্দাসী ফেরিঘাট এলাকা,কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, খানুরবাড়ী, নিকরাইল ইউনিয়নের- কোনাবাড়ী, মাটিকাটা, সিরাজকান্দি, সারপলশিয়া ও অর্জুনা ইউনিয়নের- জগৎপুড়া, কুঠিবয়ড়া, রায়ের বাশালিয়া ও বলরামপুরসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামে যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু, ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের গাইড বাঁধের কাছে শত শত ড্রেজার বসানো হয়েছে।

 

এদিকে, গত বন্যায় টাঙ্গাইল-২ (ভ‚ঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছোট মনিরের উদ্যোগে চিতুলিয়াপাড়া ও ভালকুটিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করতে জিওব্যাগ ফেলা হয়। সে সময় রক্ষা পায় নানা স্থাপনা। কিন্তু এবারো কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধির ফলে গাইড বাধের কাছে বালু আনলোডের ডেজ্রার বসিয়ে বালু আনলোড করা হচ্ছে। তাই পুরো বন্যা হওয়ার আগেই এসব ড্রেজার বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

 

চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিরা জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হলেও প্রতিবাদ করা যায় না। অনেক জমির মালিক কিছু টাকার লোভে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে জমি ইজারা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। আবার কেউ জমি না দিলে জোরপূবর্ক জমি দখল করে বালুর ব্যবসা করছেন বালু ব্যবসায়ীরা।

 

বালু আনলোড ড্রেজার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদার বলেন, যমুনা নদীতে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ওইসব এলাকায় কিছু কিছু স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। তা ছাড়া এমপি মহোদয় ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। বালু আনলোড করার ড্রেজারে যদি ক্ষতি হয় তাহলে সাইট বন্ধ রাখা হবে।

 

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, গাইড বাঁধের কাছে বালু আনলোড করার বিষয়ে জেনেছি এবং ভাঙনরোধের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভূঞাপুরে যমুনা নদীর অংশে যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিবে সেসব এলাকায় ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version