সড়ক যদি হয় খানাখন্দে ভরা আর সংস্কারহীন তাহলে সেখানকার মানুষের দুর্ভোগ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর (হিলি) সড়কে ওসমানপুর থেকে ডুগডুগিহাটের শেষ সীমানা পর্যন্ত ঘুরে দেখা মেলে এমনই চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সদর ওসমানপুর থেকে ডুগডুগি হাট বাজার পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে প্রায় ৯ কিলোমিটারই খানাখন্দে ভরা ও ভেঙে গুঁড়া গুঁড়া অবস্থা। সড়কের পিচ উঠে ইট, সুরকি এবং খোয়াগুলো সরে গেছে। জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, এটা পাকা নাকি কাঁচা সড়ক।
ওসমানপুর উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে রাস্তার ভাঙন শুরু, এরপর একটু সামনে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বহুদিন হলো, যা অল্প বৃষ্টিতেই জলের নিচে তলিয়ে যায়। সে কারণে সেখানে ইট জোরাতালি দিয়ে উঁচু করে টেমপোরারি হেয়ারিং বন্ড করা হয়েছে। কিন্তু তাতে করে আরো দুর্ভোগ বেড়েছে। এরপর বাজারের আর একটু সামনে এগোলেই তেতুলতলা হিলি বাসস্ট্যান্ড।
সেখানে দেখা মিলবে অনেক বড় বড় দুটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সবসময় পানি জমে থাকে, রিকশা বা অটোরিকশা জাতীয় ছোট গাড়িগুলো মোচড় খেয়ে প্রায়ই রিকশার রিং বেঁকে যায়, শিক ছিঁড়ে যায় বা কখনো কখনো অটোরিকশা উল্টে ঘটে চলেছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ওসমানপুর বাজার থেকে সূরা মসজিদের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। এতটুকু রাস্তা যেতে চোখে পড়বে ৩টি হেয়ারিং বন্ডসহ প্রায় ১০টি বড় গর্ত এবং ছোট ছোট অসংখ্য গর্ত।
সুরা মসজিদ থেকে বলাহার বাজারের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। এই রাস্তাটুকু যেতে চোখে পড়বে প্রায় ১৫টি বড় গর্ত এবং বেশিরভাগ জায়গায় রাস্তার পিচ থেকে শুরু করে নিচের ইট সুরকি উঠে গিয়ে কাঁচা সড়কে পরিণত হয়ে গেছে।
বলাহার বাজার থেকে ডুগডুগি হাট বাজারের দূরত্ব ৩-৪ কিলোমিটার। এই রাস্তাটুকু যেতে চোখে পড়বে ৫টি হেয়ারিংবন্ডসহ ৮-৯টি বড় বড় গর্ত ও অসংখ্য ছোট ছোট গর্ত। ফলে সড়কটি বিশেষ করে রোগী, বৃদ্ধ, শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসী জানান, ৪-৫ বছর পূর্বে থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে। সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। অল্প বৃষ্টি হলেই সড়কের মধ্যে ছোটখাটো ডোবার মতো মনে হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ওই পথ দিয়ে যাতায়াতের সময় মোটরসাইকেল বা যানবাহন থেকে ছিটকে আসা কাদা পানিতে নাজেহাল হতে হয়। উঁচু হেয়ারিংবন্ডগুলোতে গাড়ি উঠানামার সময় মোচড় খায়।
সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এসব দৃশ্য নজরে পড়ে। এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন সিএনজি ও অটোচালকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ওই সড়কে যাতায়াতের সময় শরীরে এত ঝাঁকি লাগে যে শরীর ব্যথা হয়ে যায়। বুকের হাড় পর্যন্ত নড়ে যায়। কয়দিন পর পর গাড়ি ঠিক করতেই ২-৩ হাজার টাকা করে লাগে। ওসমানপুর, পাটশাও, সুরা মসজিদ, বলাহার বাজারসহ ডুগডুগি বাজারে অসংখ্য মানুষের সাথে কথা হলেতারা একটিই কথা বলেন, ৪-৫ বছর ধরে রাস্তাটা ভাঙাচুরা অবস্থায় রয়েছে। এটা সরকারের পক্ষ থেকে মেরামতের কারো কোনো উদ্যোগ নাই কেন?
অপরদিকে ঘোড়াঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত এই রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেও এখন পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করতে পারেনি। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। উপজেলার সিংহভাগ মানুষই জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি জানান।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য