-->
শিরোনাম

ভাঙন-আতঙ্কে নদীতীরের মানুষ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
ভাঙন-আতঙ্কে নদীতীরের মানুষ
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে

উজানের পাহাড়ি ঢল আর দফায় দফায় ভারী বর্ষণে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়ার পানি বেড়েছে। তবে সামান্য কমেছে তিস্তার পানি । পানি বৃদ্ধি ও কমায় নদী এলাকায় দেখা দিচ্ছে ভাঙন। গত এক সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়ার খোলাবাড়ি, খলায়হারা ও উরিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি চরে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

 

বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের ডান তীরে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের এলাকা ভেদে কয়েক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

 

কয়েকদিনের বৃষ্টিতে খোলাবাড়ি ও খলায়হারা এলাকার কিছু অংশ ভেঙে গেছে। বাকি অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া এ গ্রামের অনেকেই বসতভিটা হারিয়েছে বলে জানান। ঝুঁকিতে রয়েছে আরো দুই শতাধিক পরিবার।

 

খলায়হারা গ্রামের নীরব মিয়া জানান, গত এক সপ্তাহে এই এলাকার প্রায় ৩০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমার প্রায় ২ বিঘা জমি হারিয়েছি। ফসলি জমিসহ বাকি জমিগুলো হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে আর ড্রেজার দিয়ে নদী খনন করার ফলে এসব জমি বিলীন হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনবার ভাঙনের শিকার হয়েছি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে বসতভিটাসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে যাবে।

 

নদী ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে উত্তর উড়িয়া গ্রামে আশ্রয় নেয়া ছমির উদ্দিন (৬৫) নামে এক কৃষক বলেন, চারবার ভাঙনে শিকার হয়েছি। সব শেষে এই গ্রামে আশ্রয় নিয়েছি। এটিও এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম রতনপুরের কিছু অংশে জিও ব্যাগ ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এখানে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

 

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ির তিস্তামুখ পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরে নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে গতকাল বুধবার ১২টা পর্যন্ত এই পরিমাণ পানি বৃদ্ধি ও কমেছে।

 

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ প্রস্তুত করে সংরক্ষণ করা রয়েছে। ভাঙন এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হবে। ওইসব জায়গায় জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে করা হবে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version