-->
শিরোনাম
পাঠদান ব্যাহত

গাইবান্ধায় বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৬৬ শিক্ষকের পদ শূন্য

রিফাতুন্নবী রিফাত, গাইবান্ধা
গাইবান্ধায় বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৬৬ শিক্ষকের পদ শূন্য

গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৬৬ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ১৩৫ জন ও সহকারী শিক্ষক ২৩১ জন। ফলে ওইসব বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৪৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ১৩৫টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। অথ্যাৎ ওই সংখ্যক বিদ্যালয়ে ১৩৫ জন প্রধান শিক্ষক নেই।

 

এসব বিদ্যালয়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭৯ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। যে সব উপজেলায় প্রধান শিক্ষক নেই, গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২১ জন, গোবিন্দগঞ্জে ২২ জন, সুন্দরগঞ্জে ২৮ জন, পলাশবাড়ীতে ১৩ জন, সাদুল্লাপুরে ১৭ জন, ফুলছড়িতে ১১ জন ও সাঘাটায় ২৩ জন।

 

অন্যদিকে জেলার দুই শতাধিক বিদ্যালয়ে ২৩১টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৪৯ জন, গোবিন্দগঞ্জে ৫৮ জন, পলাশবাড়ীতে ২৫ জন, ফুলছড়িতে ১৪ জন, সাদুল্লাপুরে ২৯ জন, সাঘাটায় ২১ জন এবং সুন্দরগঞ্জে ৩৫ জন। সহকারী শিক্ষক না থাকায় ওইসব বিদ্যালয়ে মারাত্মকভাবে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পলাশবাড়ী উপজেলার এক সহকারী শিক্ষক বলেন, আমার বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেছি। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ে পাঠদানের পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজে উপজেলায় কর্মকর্তার কার্যালয়ে যেতে হয়। এসব কারণে এক দিন পাঠদান করি, আন্য দিন প্রশাসনিক কাজে সময় দিতে হচ্ছে।

 

এতে করে কোনোটিই ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। গাইবান্ধা সদর উপজেলার এক সহকারী শিক্ষক বলেন, এমনিতেই আমার বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক তিনজন। এরমধ্যে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। তিনি উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে দুইজনেই সব সামলাতে হচ্ছে। পাঁচটি শ্রেণির পাঠদান করতে হিমশিম পড়ে যাই।

 

সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের অবিভাবক জাহিদুল ইসলাম ভোরের আকাশকে জানান, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নাই। শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়গুলোতে তেমন একটা পড়াশুনা হচ্ছে না। আমরা ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি।

 

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদের সঙ্গে কথা হলে তিনি ভোরের আকাশকে জানান, প্রধান ও সহকারী শিক্ষকরা অবসরে যাওয়ার কারণে পদ শূন্য হচ্ছে।

 

এছাড়াও নতুন করে যাদের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়, তাদের অনেকই ব্যাংকে বা ভালো চাকরি পেলে রিজাইন দিয়ে চলে যায়। ফলে ওই পদগুলো শূন্য হচ্ছে। তবে প্রধান শিক্ষক যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই, সেখানে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত। আশা করি শীঘ্রই এ সংকটের সমাধান হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version