হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরী মাহিমা আক্তার দলগতভাবে সাঁতার প্রতিযোগিতায় গোল্ড মেডেল অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন। চলতি বছরের ১২ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অনুষ্ঠিত ‘সামার অলিম্পিক গেমস-২০২৩’ এ বিশ্বের ১৭০টি দেশের প্রতিযোগীদের সাথে বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলাদেশ থেকে প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশ থেকে সামার অলিম্পিকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলে চারজন ছেলে ও চারজন মেয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। দলগত ৪.২৫ ফ্রি স্টাইল রিলেতে মেয়েদের দল চারটি গোল্ড মেডেল ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক বাংলাদেশের পক্ষে অর্জন করেছেন। দলগত চ্যাম্পিয়নে মাহিমা আক্তার একটি গোল্ড মেডেল ও ১শ ইউরো পুরস্কার অর্জন করেছেন।
মৌলভীবাজার জেলার বুলিং রুজেস বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মাহিমা আক্তার (১৫) বানিয়াচং উপজেলার ৩ নম্বর দক্ষিণ-পূর্ব ইউনিয়নের জাতুকর্ণপাড়া গ্রামের প্রবাসী শাহজাহান মিয়া ও গৃহিণী সেলিনা বেগম দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড়। ২০২২ সালে বিশেষ অলিম্পিকের জন্য কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় মাহিমা আক্তার বাছাই প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়েছিল।
মাহিমা আক্তার বানিয়াচং জাতুকর্ণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। তার বাবার বাড়ি জাতুকর্ণপাড়া গ্রামে হলেও মাহিমা বর্তমানে মৌলভীবাজারে তার নানার বাড়িতে থেকে বিশেষ শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে।
এ ব্যাপারে মাহিমার মা সেলিনা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে আমি কখনোই মন খারাপ করি নাই। সে যাই হোক সে আমার মেয়ে। বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে নিয়ে আসায় আমি আমার মেয়েকে নিয়ে গর্ববোধ করছি। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
জাতুকর্ণপাড়া স. প্রা. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, মাহিমা আমাদের বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। গোটা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনায় আমরা টিচাররা মাহিমার জন্য গর্ব অনুভব করছি।
এ ব্যাপারে স্পেশাল অলিম্পিক বাংলাদেশ হেড কোচ (সুইমিং) গোলাম মোস্তফা বলেন, জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত সামার অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের এই বিশেষ সাঁতার দলের পক্ষে মেয়েরা দলগতভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কোচ হিসেবে আমি অবশ্যই প্রাউড ফিল করি। এই অর্জনে বাংলাদেশের মুখ বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল হয়েছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য