জেলার দৌলতপুর উপজেলায় রাস্তা সংস্কার কাজের ধীরগতিতে জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। দৌলতপুর উপজেলার পংতিচ্ছামোড় থেকে রামচন্দ্রপুর পর্যন্ত শ্যামগঞ্জ সড়কের এক কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হয় এ বছরের জানুয়ারী মাসে। চলতি জুন মাসেই এ কাজের মেয়াদ শেষ হবে কিন্তু তারপরও নেই কাজের কোনো অগ্রগতি।
উপজেলার খলসী, জিয়নপুর ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের শত শত মানুষের চলাচলের একমাত্র এই শ্যামগঞ্জ সড়ক। শুধু রাস্তায় বালি ও ইটের খোয়া বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া রাস্তার পাশে স্তপ করে রাখা হয়েছে বালি ও ইটের খোয়া। এতে মোটরসাইকেলসহ যাত্রীবাহী অটোরিকশা, সিএনজি এবং মালবাহী ট্রাক চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
রাস্তায় চলাচলকালে মোটরসাইকেল আরোহী তোতা মিয়া (৩১) জানান, দৌলতপুর সদর উপজেলায় আসতে হলে এ রাস্তা ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। ইটের খোয়া বিছানো রাস্তায় চলাচলে খুব সমস্যা হয়। মতিলাল ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী সুরমা আক্তার (১৭) বলেন, এই রাস্তা দিয়ে আমাদের প্রতিদিন কলেজে আসতে হয়, কিন্তু রাস্তা খারাপ হওয়ায় রিকশায় ভাড়াও বেশি দিতে হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) দৌলতপুর উপজেলা কর্মকর্তা ইয়াজ উদ্দিন জানান, শ্যামগঞ্জ সড়কের ১ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়। ৬ মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করছে না। আমরা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি এবং কাজ করার তাগিদ দিয়েছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। তবে সামনে অর্থবছরের বছরের শুরুতে নতুন ঠিকাদার দিয়ে এ সংস্কার সম্পন্ন করা হবে। সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। কাজের দায়িত্বে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ট্রাইঙ্গেল এন্টারপ্রাইজ, যার মালিক এন হোসাইন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার এন হোসাইন বলেন, সড়কের কিছু কাজ করেছি। বিটুমিন কিনতে বিলম্ব হওয়ায় কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি। তবে ঈদের পর পর আবার কাজ শুরু করব।
তবে বিটুমিন মিশ্রিত পুরাতন খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। ঠিকাদার বলেন, বেশিরভাগ কাজ হয়ে গেছে। রোলার দিয়ে খোয়া বালি সমান করে বিটুমিন গলিয়ে পাকা করা হবে। সম্প্রতি বিদেশ থেকে বিটুমিন এলসির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে ঝামেলা হচ্ছে। এসব কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
চলতি বছরের শুরুতে সড়কের খানাখন্দ পরিষ্কার করে বালু, খোয়া ফেলে রোলার দিয়ে সমান করেন ঠিকাদার। কাজ শুরু হতে দেখে এলাকার মানুষ আশায় ছিলেন দ্রæতই তাদের ভোগান্তি শেষ হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ না হওয়ায় লোকজন হতাশ হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ সড়কের এক কিলোমিটার রাস্তায় এবড়োখেবড়ো খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। খোয়ার ওপর দিতে মানুষের চলাচল করতে হচ্ছে। ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, ভ্যান চলাচল করতে বেগ পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বৃদ্ধ, রাস্তায় চলাচলকারী রোগী ও স্কুলপড়ুয়া শিশুদের।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল রাজা বলেন, সংস্কার বন্ধ রাখার কারনে সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি কাজটি দ্রুত শেষ করার দাবি জানান।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য