চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় রয়েছে খৈয়াছড়া, রূপসী, লবণাক্ষ, নাপিত্তাছড়া, সোনাইছড়ি ও বাওয়াছড়াসহ বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় ঝরনা।
গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরূপ ঝরনাগুলোর অবস্থানসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিবরণীতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। বর্ষামৌসুমে ঝরনাগুলোর সৌন্দর্যের সঙ্গে বহুগুণ বেড়ে যায় পর্যটকের সংখ্যা।
সম্প্রতি খৈয়াছড়া ঝরনার অপরূপ সৌন্দর্যের সাক্ষী হয়েছেন সীতাকুন্ড পৌরসদরের আলী মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. জসীম উদ্দিন ও ৭নং কুমিরা ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ইউসুপ শামীম।
ভ্রমণপ্রেমীরা বলেন, মিরসরাই এর ঝরনাগুলো খুবই মনোরম। দৃষ্টিনন্দন ঝরনাগুলোর সৌন্দর্য দেখে পর্যটকদের অনেকেই নিজেদের স্মার্টফোনে স্মৃতি ধরে রাখার লোভ কিছুতেই সামলাতে পারে না। উপজেলার বিভিন্ন ঝরনায় ঘুরতে এসে গত কয়েক বছরে ১০ জনের মৃত্যুসহ অসংখ্য পর্যটক গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও থামছে না পর্যটকদের গাইড লাইন না নেয়া কিংবা সাঁতার না জেনে ঝরনার নিচে অবস্থিত কূপে অসতর্কভাবে নেমে পড়ার প্রচেষ্ঠা।
অতি উৎসাহী কিশোর ও তরুণ পর্যটকের মধ্যে নির্দেশনা মানার প্রবণতা খুবই কম, তারাই মূলত বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে মিরসরাই এর খৈয়াছড়া ঝরনায় গিয়ে দেখা যায় ১৮০-২০০ জন পর্যটকের অবস্থান। সেখানেও দেখা যায় পর্যটকেরা কোনো প্রকার সতর্কতা না মেনে ঝরনার ওপরে নিজেদের ছবি তোলতে অহেতুক ব্যস্ততা কিংবা পাশে বিপজ্জনক ঢালুতে শুয়ে থাকার দৃশ্য। এদিকে ২০ টাকার টিকিট কেটে পর্যটকেরা ঝরনা দেখতে গেলেও প্রবেশ পথ থেকে কোথাও সতর্কতামূলক কোনো দিক নির্দেশনা দেখা যায় নি।
ইজারাদাররা জানান, ঝরনা এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করে সতর্কতামূলক ব্যানার, ফেস্টুন লাগান হয়েছে। তাছাড়া মৌখিক ভাবেও ঝুঁকির বিষয়টি পর্যটকদের নিয়মিত জানানো হয়। অথচ অতি উৎসাহী পর্যটকদের সেদিকে কোনো নজর নেই। খৈয়াছড়া ঝরনায় কথা হয় সীতাকুন্ডের দক্ষিণ ইদিলপুর, আমিরাবাদ ও হাসান গোমস্তাপাড়া এলাকা থেকে আগত পর্যটক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, শাহী ইমরান সুমন, মো. নিজাম উদ্দিন, শাহ আলম, সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল নোমানের সঙ্গে।
ভ্রমণপ্রেমীরা বলেন, মিরসরাই এর ঝরনাগুলো খুবই মনোরম। দৃষ্টিনন্দন ঝরনাগুলোর সৌন্দর্যে পর্যটকদের দারূণভাবে মুগ্ধ করে। তারা আরো বলেন পর্যটকদের অনেকেই অতি উৎসাহী হয়ে বিপজ্জনক ঢালুতে চলাচল করে। এতে দেখা দেয় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। পর্যটকেরা সচেতন হলে দুর্ঘটনা অনেকটা এড়ানো যেত।
উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারি জানান, মিরসরাইয়ের ঝরনাগুলোর নিচে যে কূপ রয়েছে, তা অনেকটা কলসির মতো। ঝরনার মুখের অংশ অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও ভেতরের গভীরতা অনেক বেশি। এতে অগভীর মনে করে অনেক পর্যটক সাঁতার না জানা সত্তেও কূপে নেমে পড়ে, ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য