সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার মানুষ কৃষি শিল্পর ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তার মধ্যে জমিতে ধান চাষে বেশি আগ্রহী প্রান্তিক কৃষকরা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভালো ফলন, রোগবালাই কম হওয়া ও লাভ বেশি পাওয়ায় কৃষকরা ড্রাগন ফল চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফল অতি সহজে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান এলাকার অনেকেই।
রায়গঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এক হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে উচু জমিতে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। সিমেন্ট অথবা বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন ৩০০-৬০০ গ্রাম হয়।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিমগাছি গ্রামের রাজু আহম্মেদ লেখাপড়ার পাশাপাশি ইউটিউব দেখে প্রথমে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। গত বছর নাটোর ও বগুড়া থেকে ড্রাগন ফলের চারা এনে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম এক বিঘা জমিতে কৃষি অফিসারের পরামর্শে চাষ শুরু করেন। ফল বড় হলে প্রথমে ২ লাখ টাকা বিক্রি করেন। সব খরচ বাদ দিয়ে এক লাখ টাকা লাভ হয়। শুরুতেই তার এমন সফলতা দেখে ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়েছে অনেকেই।
উপজেলার নলকা ইউনিয়নের দত্তকুশা গ্রামের সৌরভ জানান, এক বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষে খরচ হয় এক লাখ ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা। একবিঘা জমিতে এক হাজার থেকে ১২০০ চারা রোপণ করলে একাধারে ১৫ বছর ড্রাগন গাছ থেকে ফল পাওয়া যাবে। অন্য আবাদ থেকে ড্রাগন চাষে লাভ বেশি হয়। তাই আমি লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতার মুখ দেখছি।
নিজের উচু জমি না থাকায় অন্যের আধা বিঘা জমি লিজ নিয়ে চাষ শুরু করে সফলতা পান সৌরভ। পরবর্তীতে অর্থ সঙ্কটের কারণে ড্রাগন চাষ বেশি করতে পারছিলেন না।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার যদি অল্প লাভে ঋণ দিত। তাহলে ড্রাগন চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, অন্য আবাদের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় ড্রাগন চাষে নতুন উদ্যোক্তা ধীরে ধীরে বাড়ছে। আমাদের পক্ষ থেকে চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এই ফলগুলো যাতে বিক্রি করতে পারে পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য