মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগান দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। নীল আকাশের নিচে যেন সবুজ গালিচা। নান্দনিক এ দৃশ্য দেখতে এখানে ছুটে আসেন মানুষ। এখানকার সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ‘দার্জিলিং টিলা’।
স্থানীয়রা জানান, চা-বাগানের মাঝে মাঝে টিলাবেষ্টিত ছোট ছোট জনপদ শ্রীমঙ্গল। পাহাড়, অরণ্য, পাখির অভয়ারণ্য, হাওর উচু-নিচু টিলাবেষ্টিত সবুজ চাদরে ঢাকা শ্রীমঙ্গলের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। সম্প্রতি পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এমআর খান চা-বাগানের দার্জিলিং টিলা। যা পর্যটকদের করছে আকৃষ্ট। প্রতিদিন বিকেলে এ টিলা মুখরিত হয়ে উঠে পর্যটকদের পদচারণায়।
শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে উপজেলার রাধানগর এলাকায় এমআর খান চা বাগানের ৭ নম্বর সেকশনে দার্জিলিং টিলার অবস্থান। এখানে শুধু স্থানীয়দের ভিড়ই না জায়গাটি অন্য অঞ্চলের পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। তাই সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে এ জায়গায়।
বাগান ঘুরে দেখা যায়, সবুজের সমারোহে মুগ্ধতা ছড়ানো দৃষ্টিনন্দন এ টিলা পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। প্রকৃতির সব সৌন্দর্যের সম্মিলন যেন এখানে। এমন অনিন্দ্য সৌন্দর্যে একাকার হয়ে আছে এমআর খান চা বাগান।
যেখানে রয়েছে ছবির মতো দৃশ্য। চতুর্দিকে সবুজ গাছগাছালি। দৃষ্টিজুড়ে শুধু সবুজের সমারোহ। দেখতে অনেকটা দার্জিলিংয়ের চা-বাগানের মতো। আঁকাবাঁকা পথ, ঢেউ খেলানো সমান্তরাল রাস্তা নিমেষেই যে কারো বিষণ্ণ মনে প্রশান্তির ঢেউ এনে দিতে পারে। সবুজ গালিচা মোড়ানো চা-বাগানের প্রকৃতির এমন সান্নিধ্য পেতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে যাচ্ছেন পর্যটকরা।
স্থানীয়রা টিলাটির নাম দিয়েছেন দার্জিলিং টিলা। তারা জানান, এ টিলা এবং চা-বাগানটি দেখতে দার্জিলিংয়ের মতো। তাই পর্যটকদের কাছেও এটা দার্জিলিং টিলা নামেই অধিক পরিচিত। চা-বাগানের বাসিন্দা সন্তোষ চন্দ্র, কৃষ্ণা চন্দ্র ও বাবু লাল জানান, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক লোক এ চা-বাগানের দার্জিলিং টিলা দেখতে আসেন। ছুটি এবং শীতের শুরুতে এখানে বেশি পর্যটকদের আনাগোনা থাকে।
সিলেট থেকে আসা সুনীল দাস জানান, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাসই হতো না চা-বাগানের দার্জিলিংয়ের মতো দৃষ্টিনন্দন জায়গা রয়েছে। মৌলভীবাজার শহর থেকে আসা তারেক আহমদ বলেন, চা-বাগান আর টিলার অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি। এখানে এসে যেকোনো দর্শনার্থী মুগ্ধ না হয়ে পারবে না। কমলগঞ্জ থেকে আসা প্রণীত সিংহ জানান, অনিন্দ্যসুন্দর এ টিলার সারি সারি চা-বাগান সত্যিই মুগ্ধকর।
সেখানে কথা হয় লাভলি, লাবণী, কামরান, সুমন নামের একাধিক দর্শনার্থীদের সঙ্গে। তারা বলেন, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের অন্যতম একটি স্পট এ দার্জিলিং টিলা। মনজুড়ানো চা-বাগান আর টিলার সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করেছে। এ জায়গায় কেউ না আসলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য তাকে বুঝানো যাবে না।
বাগানের জেনারেল ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বাগানের প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশ চমৎকার। বিশেষ করে এ বাগানের ৭ নম্বর সেকশনটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। এটি দেখার জন্য বিভিন্ন সময় মানুষ ঘুরতে আসেন।
আমাদের কাছে চা-বাগান সবুজ টিলা একই রকম মনে হয়। পর্যটকদের কাছে কোন সময় কোনটি ভালো লাগে সেটি বোঝা মুশকিল। চা-বাগানে এভাবে যাতায়াতের সুযোগ নেই। পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে সুযোগ করে দিয়েছি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, উপজেলার সব স্পটে পর্যটকরা যাতে সুন্দর এবং নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন সেটি নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য