চান্দুয়াইল সেতুর নির্মাণকাজ শুরুর আগে কলমাকান্দা-দুর্গাপুর সড়ক সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। খালে পানির চাপ বাড়ায় সেতুর কাছে সড়কের দুই পাশে ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় সড়কটি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
নেত্রকোনা এলজিইডি থেকে জানা গেছে, ১২ কোটি ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৩২৮ টাকা ব্যয়ে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজ’ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বছরের মার্চ মাসে সেতুটির কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
নির্মাণকাজে কোনো ধরনের ভুল থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এলজিইডির কলমাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী শুভ্রদেব চক্রবর্তী। যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে বিলম্বের কথা স্বীকার করে প্রকৌশলী শুভ্রদেব চক্রবর্তী বলেন, এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ হয়েছে। এরই মধ্যে ঠিকাদারকে কাজের গতি বাড়াতে চিঠি দেয়া হয়েছে।
কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তার দাবি, রাস্তার ফাটল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে লাল কাপড় টানানো হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকটি নদীর সঙ্গে সংযুক্ত জিয়া খালে বৃষ্টির পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় সড়ক ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বর্ষার শুরুতেই রাস্তার অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। নাজিরপুর গ্রামের কৃষক মো. শামসুদ্দিন বলেন, সড়কটি ভেঙে গেলে এসব এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হবে। আরেক কৃষক সাহেব আলীর আশঙ্কা, সড়ক ভেঙে গেলে আউশ ধান ও সবজির ক্ষয়ক্ষতি হবে।
ঢাকা-কলমাকান্দা যাত্রীবাহী বাসের চালক তরিকুল ইসলামের ভাষ্য, চান্দুয়াইল সেতুর দুই পাশে সড়ক ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। কলমাকান্দার সীমান্তবর্তী লেঙ্গুড়া বাজার থেকে এই সড়ক দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে দুশ্চিন্তা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কটিতে অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই ট্রাক চলাচলে বিধিনিষেধের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। কিন্তু এখনো তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সড়কটি ভাঙন থেকে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে দাবি লেঙ্গুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের।
নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আলী বলেন, সড়কটি ভেঙে গেলে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরের প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়বে।
সড়কটির বিপজ্জনক অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) শহিদুল ইসলাম। তার ভাষ্য, উপজেলা প্রকৌশলীকে গাইডওয়াল নির্মাণ, বালুর বস্তা ফেলাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর এই সড়কে কোনো যানবাহন চলাচলের অনুমতি নেই।
জানতে চাইলে নেত্রকোনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম শেখ বলেন, ভাঙন থেকে সড়ক রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য