-->
শিরোনাম

পরিত্যক্ত কলাগাছ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে উন্নতমানের সুতা

নড়াইল প্রতিনিধি
পরিত্যক্ত কলাগাছ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে উন্নতমানের সুতা
নড়াইলে কলাগাছ থেকে সুতা উৎপাদনে ব্যস্ত শ্রমিক

অনেকটা স্রোহা মিলের মতো দেখতে সারি সারি মেশিন থেকে বেরিয়ে আসছে আঁশ। আর এ আঁশ বের হচ্ছে পরিত্যক্ত কলাগাছ থেকে। গাছের উৎকৃষ্ট অংশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের বড়েন্দার গ্রাম। এই গ্রামের কাঁকড়ার বিল নামক নির্জন মাঠে গড়ে উঠেছে একটি আধা-পাকা ভবন। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় বাঁশের আড়ে লম্বা করে রোদে শুকানো হচ্ছে কলাগাছের বাকল।

 

কলাগাছ থেকে কলা সংগ্রহের পর ফেলে দেয়া হয় গাছটি। কোনো প্রয়োজন ছাড়াই মাঠেই পচে যায় এ গাছগুলো। কিন্তু সেই গাছগুলোর খোলা বের করে বিদ্যুৎচালিত মেশিনে দিয়ে বের করা হচ্ছে আঁশ। আঁশগুলো রোদে শুকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। এই আঁশ থেকে তৈরি হচ্ছে পোশাকশিল্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন হস্তশিল্পের নানা পণ্য।

 

কলাগাছ থেকে সুতা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করা নারী উদ্যোক্তা গোলসানা আরা পারভীন জানান, একটি কলাগাছের বাকল থেকে কমপক্ষে ২০০ গ্রাম সুতা উৎপাদন করা সম্ভব। স্থানীয়ভাবে প্রতিটি কলাগাছ ১৫ টাকা দরে কেনা হয়। পরিবহন খরচ বেশি হলে কলাগাছ কিনতে গেলে খরচও বাড়ে। ৫টি কলা গাছের বাকল থেকে ১ কেজি সুতা পাওয়া যায়।

 

এছাড়া কলার বাকল থেকে ফাইবার সংরক্ষণের পর বাকি অংশ থেকে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করা যায়। প্রতি কেজি কম্পোস্ট সার ২০ টাকায় বিক্রি হয়। এখানে ৫০ জন নারী শ্রমিক রয়েছে তারা সকাল ৮টায় এসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেন। ফলে এই কারখানায় কমপক্ষে ৫০ জন নারী কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।

 

বীরগ্রামের নারী শ্রমিক জয়িতা বিশ্বাস বলেন, আমি একজন বিধবা। স্বামী মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্টে সংসার চলছিল। এখন এই কারখানায় কাজ করে ছায়ার ভেতর থেকে টাকা আয় করতে পারছি। আমার মেয়েটিকে পড়াশোনা করাচ্ছি। সব মিলিয়ে খুবই ভালো আছি আমি।

 

সুর্বণা বিশ্বাস বলেন, আগে আমি মাঠে কাজ করতাম। এখন এই কারখানায় কাজ করি। আমিসহ ৫০ জনের অধিক নারী শ্রমিক এখানে এক সঙ্গে কাজ করি। নির্জন এই জায়গাতে কম কষ্টে ভালো বেতনে কাজের সুযোগ হয়েছে আমাদের।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version