বাংলাদেশে এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে শিমুল গাছের দেখা মেলে না। ফাল্গুন মাসে শিমুল ফুল লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলালেই সবার আকর্ষণ বাড়ে। তবে ময়মনসিংহের একটি শিমুল গাছ ফাল্গুন মাস ছাড়াও সারা বছরই সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। জেলার ত্রিশাল উপজেলার সাখুয়া ইউনিয়নের বালির বাজার এলাকায় গাছটির অবস্থান। প্রতিদিন গাছটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসে। তবে সবচেয়ে বেশি লোকজন আসে সরকারি ছুটির দিনে।
স্থানীয়রা জানান, এটির বয়স কমপক্ষে ৫০০ বছর হবে। বিশাল আকৃতির এই গাছটি কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে।
কথিত রয়েছে, এ গাছটির জন্য অনেকের মনের বাসনা পূরণ হয়। তাই অনেকেই গাছের নিচে মানত হিসেবে গরু, খাসি, মোরগ, জবাই করে রান্নাবান্না করে। অনেকেই জিলাপি, কলা, মিষ্টিসহ বিভিন্ন খাবার নিয়ে আসেন এখানে।
পরে এগুলো স্থানীয়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ফাল্গুন মাসে পুরোনো এ শিমুল গাছজুড়ে এখনো টকটকে লাল শিমুল ফুল ফোটে। ফুল লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলায়। তখন দূর থেকে হঠাৎ দেখলে ঠিক মনে হবে, কেউ লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছে। শিমুল ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন সবাই।
৭০ বছর বয়সি আবুল হাশেম নামে একজন বলেন, আমি জন্মের পর থেকেই গাছটার এই এক রকম দেখে আসছি। আমার বাবাও একই কথা বলতেন গাছটির ব্যাপারে, শুনেছি বাবার বাবাও তাই বলেছেন। তাছাড়া এ গাছের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেক গল্প। পূর্বপুরুষ বলেছেন, প্রাচীন আর বৈচিত্র্যে ভরা শিমুল গাছটির রয়েছে অদৃশ্য ক্ষমতা।
সারোয়ার হোসেন নামে আরেকজন বলেন, এই পুরোনো শিমুল গাছটি কাটার জন্য অনেকেই চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই কাটা যায়নি। যে গাছটি কাটতে যায়, সে অসুস্থ হয়ে যায়। এটি আমাদের এলাকার পুরোনো একটি গাছ, এটি আমাদের ঐতিহ্য। তাই সব দিক বিবেচনা করে এটিকে কাটার কথা এখন কেউ চিন্তা করে না।
ফরহাদ হোসেন নামে একজন দর্শনার্থী বলেন, পরিবারসহ ঢাকার গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহে ঘুরতে এসেছিলাম। এসে জানতে পারি, ত্রিশালে ৫০০ বছরের আলোচিত একটি শিমুল গাছ রয়েছে। পরে এখানে এসে গাছটির নিচে বসে ও ছবি তুলে অনেক আনন্দ করেছি।
এ বিষয়ে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুয়েল আহমেদ বলেন, গাছটি অনেক পুরোনো। গাছটির আকৃতি ও সৌন্দর্য সবাইকে আকর্ষণ করে। তবে এটিকে নিয়ে কেউ যেন ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেদিকে সবার সচেতন থাকতে হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য