-->
শিরোনাম

মরুর ফল চাষে স্বপ্ন বুনছেন জাকির

দিনাজপুর প্রতিনিধি
মরুর ফল চাষে স্বপ্ন বুনছেন জাকির
খেজুর বাগান পরিচর্যা করছেন জাকির হোসেন

সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ, লাল রঙের ফল। এটি মরুভূমির ফল হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবের বিখ্যাত আজওয়া ও মরিয়ম জাতের খেজুর। এর চাষ করে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার স্বজন পুকুর গ্রামের প্রবাস ফেরত জাকির হোসেন।

 

মরুর এ ফল চাষের অসাধ্যকে সাধন করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জাকির। এখন তার বাগানের গাছে ফল এসেছে পাশাপাশি তৈরি করেছেন ১ হাজার নতুন চারা। আগামীতে বাগানের পরিধি বাড়াবেন। খেজুর ও চারা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতও করবেন বলে জানান বাগান মালিক জাকির হোসেন।

 

পৌর এলাকার স্বজন পুকুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তার মিল চাতাল সংলগ্ন পরিত্যক্ত ২০ শতক জমিতে সারিবদ্ধভাবে লাগানো রয়েছে ১৯টি সৌদির মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজল ও আম্বার জাতের খেজুর গাছ। এগুলো তাকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। গত বছর প্রথমবার তিনটি গাছে অল্প কিছু খেজুর পেলেও এবার ৯টি গাছে বেশ খেজুর ধরেছে। গতবারের খেজুর দিয়ে তৈরি করছেন ১ হাজার চারা।

 

খেজুর চাষি জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর কুয়েতে থাকা অবস্থায় মাথায় চিন্তা আসে দেশের মাটিতে কীভাবে খেজুর চাষ করা যায়। একপর্যায়ে দেশে আসার সময় ১২ কেজি পাকা খেজুর কিনে এনে দেশে চারা করার চেষ্টা করি। এটি সফলও হয়। বর্তমানে বাগানের প্রতিটি খেজুর গাছের বয়স ৪ থেকে ৬ বছর।

 

জাকির হোসেন বলেন, এ খেজুর গাছ সাধারণত একটু উঁচু জমিতে হলে ভালো হয়। গাছের গোড়ায় সবসময় জৈব সার ব্যবহার করতে হয়। বর্তমানে তার বাগানের খেজুরগুলো অপরিপক্ব। তবে ২০-২৫ দিনের মধ্যে খেজুরগুলো পরিপূর্ণভাবে পেকে যাবে। পরের বছর হয়তো সব গাছে খেজুর আসবে। এ বছর ৯টি গাছ থেকে প্রায় ২৮০ কেজি ফল পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

 

ইতোমধ্যে অনেকেই ফল কেনার জন্য যোগাযোগ করছেন। প্রতি কেজি খেজুরের দাম ৪০০ টাকা করে বলেছেন। একইসঙ্গে অনেকেই চারার জন্য যোগাযোগ করছেন।

 

জাকির হোসেন বলেন, ‘এ বছর আমি ২ একর জমি প্রস্তুত করেছি। সেই জমিতে আরো ৩০০ খেজুর চারা রোপণ করে বাগানের পরিধি বাড়াব। বাগান বৃদ্ধি ও চারা বিক্রি জন্য আজওয়া ও মরিয়ম জাতের খেজুরের বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরি করছি। আশা করছি, আগামী বছর প্রতিটি গাছে খেজুর আসবে। এতে করে ভালো লাভবান হব।’

 

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় এই প্রথম একজন কৃষক সৌদির খেজুর চাষ করছেন বলে শুনেছি। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে বাগানের খোঁজ রাখা হচ্ছে। দু-এক দিনে মধ্যেই নিজেই বাগান পরিদর্শনে যাব। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version