প্রায় সাত বছর যাবৎ সংস্কারকাজ করা হয়নি বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার সাইলো সড়কের। ফলে প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কটি বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়েই সাইলো দুটির পণ্য এবং একটি বাফার গুদামের সার এ সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে জনসাধারণের চলাচলেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এদিকে সংস্কারহীন সড়কের কারণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে দুপাশের সাড়িবদ্ধ তালগাছের দৃশ্যও।
জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহারে ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুটি সাইলো (একটি গম ও একটি চাল) এবং ২৫ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি সারের গুদাম রয়েছে। সাইলোর খাদ্যশস্য আর বাফার গুদামের সার পরিবহনের জন্য এ সড়ক দিয়ে অসংখ্য ট্রাক চলাচল করে। পাশাপাশি এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সান্তাহার পৌরশহর, সান্তাহার ইউনিয়ন, আদমদীঘি সদর ও নওগাঁর পারইল ইউনিয়নের বোদলা-পালশাসহ প্রায় ২০-২৫টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকে।
২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সান্তাহারে নতুন একটি সাইলো (খাদ্যগুদাম) উদ্বোধনের জন্য আসেন। তখন সড়কটি আংশিক সংস্কার করা হয়। এরপর প্রায় সাত বছর পার হলেও সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। বর্তমানে সাইলোর সামনে থেকে খাড়ির ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটির বেশির ভাগ স্থানে পিচ ওঠে গিয়ে ইট-খোয়া বের হয়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সান্দিড়া গ্রামের বাসিন্দা কোরবান হোসেন জানান, বর্তমানে সড়কের যে বেহাল দশা হয়েছে তাতে কোনো যানবাহনই সাইলো সড়ক দিয়ে যেতে চায় না। কিন্তু সান্তাহার পৌর শহরে যাতায়াতের জন্য বিকল্প কোনো সড়ক নেই। ফলে নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এ সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দমদমা গ্রামের অটোভ্যান চালক মো. হাসান জানান, সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের কারণে যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
সেই সঙ্গে মাঝে মধ্যেই বিকল হয়ে পড়ছে যানবাহনগুলো। সান্তাহার পৌর শহরের ট্রাক মালিক কাজি রায়হান ইসলাম রানা বলেন, সাইলো ও সার গুদামে মালামাল পরিবহনের জন্য ওই সড়ক দিয়ে অসংখ্য ট্রাক চলাচল করে। বর্তমানে সাইলো সড়কের যে দশা, তাতে করে কোনো ট্রাক মালিকই ওই সড়কে চালানোর জন্য ট্রাক দিতে চান না। চালকেরাও ওই সড়ক দিয়ে ট্রাক চালাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
শুভসংঘের উপজেলা শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম সুমন বলেন, সাইলো সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বেহাল এ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। তাছাড়া সড়কের দুপাশের ৭ শতাধীক তালগাছ শোভাবর্ধণ করে যাচ্ছে। সড়কের সৌন্দর্য বাড়াতে আমরা তালগাছগুলোতে রঙ করার উদ্যোগ নিয়েছি।
ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরুও করা হয়েছে। সান্তাহার সাইলো অধিক্ষক শাহারিয়ার মো. সালাউদ্দীন বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। তারা আমাদের জানিয়েছেন অচিরেই সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য