শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে এবার পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চ মূল্যের কাজু বাদামের চাষ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ওইসব বাগানের কাজু বাদাম পরিপক্ব হতে শুরু করেছে। এজন্য সীমান্তের পাহাড়ি আদিবাসী-বাঙালিদের মনে আশার সঞ্চার হচ্ছে।
জানা যায়, অবহেলিত ও প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদের অর্থনৈতিক চাকা ঘুরে যেতে পারে এ উচ্চ মূল্যের কাজু বাদাম চাষে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেষা প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকা হাতির আক্রমণের ভয়ে এবং কিছু এলাকায় পানির অভাবে পতিত থাকে। সেখানে কাজু বাদাম চাষ হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক আগে থেকে কাজু বাদামের চাষ হয়ে আসছে। তবে শেরপুরের গারো পাহাড়ি এলাকায় গত প্রায় ৩ বছর আগে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ‘কাজু বাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’র আওতায় সাড়ে ১৮ একর জমিতে মোট ৩৬টি প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে কাজু বাদাম চাষ শুরু করা হয়। প্রায় ৩ বছরের মাথায় বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী বাগানে বাদাম পাকতে শুরু করেছে। বাগানে এখন থোকা থোকা ঝুলছে কাজু বাদাম।
এ কাজু বাদাম গাছ থেকে ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে। আর প্রতিকেজি বাদাম বিক্রি করা যায় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। তবে প্রসেসিং ছাড়াগুলো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়। এ বাদাম পাকার পর উপরের অংশ আপেলের মতো খাওয়া যায় এবং নিচের অংশ থেকে নির্ধারিত যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় বাদাম বের করা হয়ে থাকে।
গজনী এলাকার বাগান মালিক সোয়েব হাসান শাকিল বলেন, আমার বাগানে গত বছর থেকে ফুল আসতে শুরু করে এবং এবার ফল হয়ে পাকতে শুরু করছে। আমার ৫০ শতক জমিতে ২০০ গাছ রয়েছে। ৩ বছরে আমার সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি, আগামী বছর থেকে ফলন আরো বাড়বে এবং প্রতি গাছে প্রায় ১৫-২০ কেজি করে বাদাম পাওয়া যাবে। এতে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বাদাম বিক্রি করা যাবে।
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, উচ্চ মূল্যের এ কাজু বাদাম দেশের নতুন অর্থকরী ফসল। কিন্তু দেশে এ ফসলের অনেক ঘাটতি রয়েছে। তাই আমদানিনির্ভরতা কমাতে এবং বাংলাদেশকে সমৃদ্ধি করে গড়ে তুলতে নতুন এ ফসলকে শেরপুরের গারো পাহাড়সহ পুরো দেশে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
এ ছাড়া কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কাজু বাদামের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য