-->
শিরোনাম

অবৈধভাবে মাছ চাষ চলছে আয়মন নদীতে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
অবৈধভাবে মাছ চাষ চলছে আয়মন নদীতে
আয়মন নদীতে জালের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় নতুন বাজার এলাকায় আয়মন নদীতে অবৈধভাবে কাঠ ও জালের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ফলে স্থানীয়রা মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছেন না। স্থানীয় প্রশাসন ইউএনওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জরুরি পদক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

 

সূত্র বলছে, ময়মনসিংহ জেলায় প্রায় ৫৯টি নদ-নদী রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৩০টি নদী বিলীনের পথে। সরকারিভাবে নদ-নদী তদারককারীদের চরম অবহেলা ও উদাসীনতায় সরকারি স্থাপনা তৈরি করাসহ প্রভাবশালী ও স্থানীয় অধিবাসীদের দখলে চলে গেছে এসব নদ-নদী। আগে আয়মন নদীতে জেলেরা মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

 

নদী খননের পর স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের আত্মীয়স্বজনেরা নদীর মাঝে কাঠ ও জালের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করায়, নদী পাড়ের লোকজন নদীতে মাছ ধরা তো দূরের কথা নদীর জলও স্পর্শ করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

স্থানীয়রা জানান, এক সময় আয়মন নদীর ওপর দিয়ে তৎকালীন জমিদাররা পণ্য পরিবহন ও নিজেরা জলযানে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। কালের বিবর্তনে অবহেলা আর দেখভালকারীদের উদাসীনতায় দখল-দূষণে নদীটির নাব্য হারিয়ে ফেলেছে। নদীটি খননে সরকারি কার্যক্রম গ্রহণ না করায় ভরাট হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে। নদীটি অবৈধ দখলমুক্ত না হলে ভবিষ্যতে মুক্তাগাছা শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে এবং বর্ষায় শহর জলমগ্ন হয়ে পড়বে।

 

এদিকে স্থানীয় এমপি ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এবং পৌরসভার মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকারের উদ্যোগে উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় আয়মন নদীর প্রায় ১ কি.মি অংশ খনন করা হয় এবং খনন শেষে নদীতে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়।

 

পরবর্তীতে পৌর মেয়রের নাম ভাঙিয়ে মনিরুজ্জামান আকাশসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নদীতে জাল পেতে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছেন এবং নদীর পাড়ের লোকজনকে নদীতে নামতে নিষেধ করেছেন বলে অভিয়োগ করেছেন নদীর পাড়ের লোকজন। এতে নদীর পাড়ের জেলেরা নদীতে নামতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

 

এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগ করা এমদাদুল নামের একজন ভোরের আকাশকে বলেন, বর্তমানে এলাকার প্রভাবশালীরা আয়মন নদীতে জাল ও বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছে। এতে এলাকার অসহায় দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

 

নদী দখল করে মাছ চাষের অভিযোগ প্রসঙ্গে অন্যতম দখলবাজ মনিরুজ্জামান আকাশ বিষয়টি অস্বীকার করলেও আয়মন নদীর খননের সময় টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আয়মন নদীর থেকে দুই-চারজনের টাকা নিছি, আমি খাইছি। আমি যে টাকা নিয়েছি, আমি তো আমার কথায় নেইনি, টাকাটা যেভাবে নিয়েছি সেভাবে মেয়র মহোদয়ের কাছে দিয়ে দিছি। তবে টাকার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে পৌর মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার নিশ্চিত করেছেন।

 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম লুৎফর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, নদী দখল করে মাছ চাষ করা অবৈধ ও অন্যায়। যদি জালের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করা হয় তাহলে প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version