-->
শিরোনাম

রেলের জমি কিনে বিপাকে

নরসিংদী প্রতিনিধি
রেলের জমি কিনে বিপাকে
নির্মাণাধীন প্রাচীরে ঝোপঝাড় হয়ে আছে

নরসিংদীর মহিষাশুড়া ইউনিয়নের চৌদ্দপাইক্কা, বিলপার, কোতালীরচর মৌজায় রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের নালা-ডোবা জমি। এই জমিগুলো প্রায় দখলে চলে গেছে। এর মাঝে চৌদ্দপাইক্কা মৌজায় অবস্থিত আটপাইকা গ্রামে রেলওয়ের জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন মানিক চন্দ্র কর্মকার।

 

মাধবদী বাজারের চালের ব্যবসায়ী মানিক চন্দ্র কর্মকার। বসবাস করেন আনন্দী কালীবাড়ী এলাকায়। প্রায় বছর চারেক আগে চৌদ্দপাইক্কা মৌজায় আটপাইকা গ্রামে রেলের জমি কেনেন তিনি। তবে ওই জমি রেল কর্তৃপক্ষ বা সরকারি কোনো রেজিস্ট্রি হলফে কেনা হয়নি। স্থানীয় একটি চক্রের মাধ্যমে খোলা স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে কিনেছেন।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আটপাইকা এলাকায় সাবেক রেল সড়কের পাশে আধাপাকা ঘর নির্মাণের নামে সুকৌশলে স্থায়ী মার্কেট নির্মাণকাজ শুরু করেছেন অনেকে। এর মাঝে আটপাইকা গ্রামে সাবেক রেল সড়ক থেকে প্রায় আট ফিট নিচে একটি নির্মাণাধীন অবকাঠামো। সেখানে লোহার রডগুলোতে মরিচা পড়ে গেছে। নির্মাণসামগ্রীগুলো নষ্ট হয়ে মিশে যাচ্ছে মাটির সঙ্গে। এই নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন মানিক চন্দ্র কর্মকার।

 

জানা যায়, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রেলের জমি চুক্তিপত্র করে মানিক চন্দ্র কর্মকারকে প্রায় ১২ শতাংশ রেলের জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়। পরে একটি মহলের সার্বিক সহযোগিতায় ওই জমিতে ২০২০ সালে মানিক চন্দ্র কর্মকার সিসি ঢালাই দিয়ে স্থায়ী নির্মাণকাজ শুরু করেন।

 

কিন্তু স্থানীয়দের মাধ্যমে রেলসংশ্লিষ্টদের নজরে এলে নির্মাণকাজে বাধা আসে। এরপর থেকে আজও নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেননি মানিক চন্দ্র কর্মকার। পরে তিনি রেলওয়ের জমির মালিকানা দাবি করে মাধবদীতে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।

 

মানিক কর্মকারের দাবি, চৌদ্দপাইক্কা গ্রামের এম এ হান্নানের ছেলে এম এ শাহীন মাহমুদ বাবুল, শাহেদ আলীর ছেলে মোতালিব মিয়া ও ছোট মাধবদী এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে মামুন মিয়া গংয়ের কাছ থেকে মোট ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ জমি কিনে ছিলেন। ক্রয়সূত্রে ভোগদখলে থাকা অবস্থায় এ জমিতে ঘর নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেন।

 

মানিক চন্দ্রের ছোট ছেলে লিটন চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘আমার বাবা রেলের জমি হলফনামায় কিনেছেন। বিক্রেতারা লিজ নেয়া বৈধ জমি আমাদের কাছে বিক্রি করেছেন। এ নিয়ে আমরা আদালত পর্যন্ত গিয়েছি। তবে আমরা ছাড়া এই জমির কোনো মালিক আদালতের শরণাপন্ন না হওয়ায় আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন।’

 

মানিক চন্দ্র কর্মকারের কেনা জমির পাশের মার্কেটে ইট-বালুর ব্যবসা শুরু করেন ষাটোর্ধ্ব বয়সের হাজি আবুল হাসেম। তিনি বলেন, রেলের জমির পাশের জমিগুলোর মালিক যারা তাদের অনেকের নামে আরএস পর্চা আছে। সেই সুযোগে অনেকে ভোগদখল করে খাচ্ছেন।

 

মহিষাশুড়া, পাইকারচর, কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের খড়িয়া, ডৌকাদী, কাঁঠালিয়া, কোল্লাতপুর, নোয়াকান্দি মৌজায় জমিগুলো ভোগদখল করে খাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। তারা এগুলো বেচাবিক্রিও করে চলেছেন।

 

স্থানীয় ভূমি অফিস সূত্র জানায়, মহিষাশুড়া ইউনিয়নে চৌদ্দপাইক্কা, কোতালীরচর, বিলপার এই তিনটি মৌজায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পতিত জমি রয়েছে। তবে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির পরিমাণের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version