-->

পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছে না চাষিরা

অজয় ঘোষ, রাজশাহী
পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছে না চাষিরা
রাজশাহীর পবায় পাট কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা

রাজশাহীতে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষিরা। ভরা বর্ষা মৌসুমেও খালবিল নদীতে পানি না থাকায় পাট পচাতে পারছেন না তারা। শুকনো খালে বাঁধ দিয়ে পানি সংরক্ষণ করায় চাষিকে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজশাহী জেলার খাল-বিল, ডোবা-নালা এমনকি পাট খেতেও পানি থাকার কথা। অথচ এবার উল্টো চিত্র। বৈরী আবহাওয়ায় খাল বিলে পানি না থাকায়, পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষিরা।

 

খালের মতো ছোট ছোট বাধ দিয়ে স্যালো মেশিন দিয়ে, পাট জাগ দিচ্ছেন অনেক কৃষক। কিন্তু এতে পাটের রং শৈলী না হয়ে, কালো রং ধারণ করছে। বর্তমানে অনেক চাষি বৃষ্টির পানির আশায় জমি থেকে পাট কাটছে না। কিন্তু এর মধ্যে পোকার আক্রমণও আছে। আবার যারা কাটছে, তারা জমিতে অথবা বিভিন্ন যত্রতত্র ভাবে ফেলে রাখছে। এতে অনেক পাট শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানসম্মত পাট না পাওয়ায় লাভের বদলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

 

রাজশাহী পবা এলাকার কৃষক মতি মিয়া জানান, পাট খরার কারণে ছোট হয়ে গেছে, বৃষ্টি নাই, পোকা লাগছে। এই জমিতে এই সময় একহাঁটু পানি থাকে কিন্তু এখন একটুও পানি নাই। এবার পুকুরেও পানি নাই, পাট মরে গেছে। এজন্য খড়ি করা ছাড়া উপায় নাই।

 

কৃষক আব্দুল লতিফ জানান, এখন ধান লাগানোর সময় হয়ে গেছে তাই পাট কেটে লিয়ে গিয়ে বাগানে রেখে দিছি। এখন পানির অপেক্ষায় আছি। আল্লাহ পানি দিলে পাট ডোবানো হবে, নয়তো শুকাই খড়ি হয়ে যাবে। ধান লাগাতে হবে কিন্তু ধান লাগাতে পারবো কিনা জানি না।

 

জেলার পুঠিয়া উপজেলার পাট চাষি রফিক বলেন, আমরা পাট লিয়ে খুব অসহয়তার ভেতর আছি। আকাশে কোনো বৃষ্টি নাই। জমিতে কোনো পানি নাই। এবং আমাদের জমির পাশে একটা খাল আছে, খালেও পানি নাই। সরকারের কোনো উদ্যোগ নাই। পানি দিলে আমরা পাট জাগ দিতে পারব। পাট লিয়ে আমরা খুব কষ্টের ভেতর আছি।

 

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, ইতোমধ্যে পাট কাটা শুরু হয়েছে ও পাট পচনের কাজও চলছে। বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। বৃষ্টি আরো হবে। যেহেতু অনেক খাস পুকুর রয়েছে এসব জায়গায় কৃষকরা পাট পচাতে পারবে। পাটে বিছা পোকা, ঘোড়া পোকার আক্রমণ বেশি হয়। সেই ক্ষেত্রে এই পোকা যেন কৃষকরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাই কীটনাশক না দিয়ে প্রথমে আইফেন পদ্ধতিতে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেই বিষয়ে কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি।

 

তিনি বলেন, এ বছর ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৫২ হাজার ৯৪৬ টন পাট উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version