বগুড়ার শিবগঞ্জে বারোমাসি মুলা চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছে কৃষকরা। বাজারে চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মুলা সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির কল্যাণে এ উপজেলায় সারা বছরই মুলা চাষ হচ্ছে। সাধারণত ৪০-৪২ দিনের মধ্যেই মুলা বিক্রির জন্য উপযোগী হয়ে উঠে।
সুনিষ্কাশিত বেলে দোআঁশ মাটি মুলা চাষে উপযোগী। এবার খরিপ-২ মৌসুমে ৫০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও চাষ হচ্ছে ২৫ হেক্টর জমিতে। উপজেলার বাঘমারা, তালিবপুর, কৃষ্ণপুর, মধুপুর, বালুপাড়া, আঁচলাই, রায়নগরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মুলা ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকা। যেখানে প্রতি বিঘা জমির মুলা বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ টাকা। আর বিঘাপ্রতি খরচ হচ্ছে ২৫-৩০ হাজার টাকা।
উপজেলার তালিবপুর এলাকার কৃষক মো. মাজেদ আলী বলেন, মুলার বাজারদর একেক দিন একেক রকম। আমি ৩ বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছি। জমিতেই পাইকাররা ৩ লাখ টাকা দাম করছে কিন্তু আমি রাজি হইনি। আশা করছি দাম আরো বাড়বে।
কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, পর পর দুইবার মুলার বীজ বপন করেছিলাম পোকার জন্য গাছ বড় হতেই পারেনি, নষ্ট হয়ে যায় জমির মুলা। আমার খরচের টাকাই উঠেনি। এখন ২০ শতক জমিতে মুলা চাষ করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে মুলা বাজারে তুলব। এখন দাম ভালো হওয়ায় গতবারের লোকসান পুষে উঠতে পারব।
মুলার পাইকার মো. কাওসার আলী এবং ওমর ফারুক বলেন, আমরা প্রতিদিন কয়েক ট্রাক মুলা এ এলাকা থেকে কিনে ঢাকার বাজারে পাঠাই। তবে এই বাজার স্থিতিশীল নয়। তাছাড়া শীতকালীন মুলার চেয়ে গ্রীষ্মকালীন মুলার বাজারদর বরাবরই ভালো থাকে।
উপজেলার রহবল বøকে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. সাইফুর রহমান বলেন, অমৌসুমের ফসল চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারে। তিনি আরো জানান, রহবল ব্লকে ১০-১৫ হেক্টর জমিতে সারা বছরই কৃষকরা মুলা চাষ করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল মুজাহিদ সরকার বলেন, কৃষির নানা ধরনের ফল, ফসল ও শাকসবজিতে ভরপুর শিবগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার কৃষকরা সারা বছরই বিভিন্ন সবজির চাষ করে থাকে। অসময়ের ফসল উৎপাদনে সুদক্ষ এখানকার কৃষকরা। বিভিন্ন কৃষি উপকরণ (বীজ, সার, বালাইনাশক) কৃষকদের চাহিদা মতো তাদের দোরগোড়াই পৌঁছে দিচ্ছি আমরা।
এছাড়া আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি নিরাপদ উচ্চমূল্য ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য