পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় গত ৬ দিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। পর্যটন এলাকাটিতে গত দুই তিন দিন কখনো ৩১৩ আবার কখনো ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। টানা বৃষ্টি হওয়ার ফলে চারদিকে বেড়েছে জলাবদ্ধতা এবং বৃদ্ধি পেয়েছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা। এতে কুয়াকাটায় কমছে পর্যটক।
মঙ্গলবার সৈকত এলাকার বিভিন্ন হোটেলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃষ্টি হওয়ার শুরু থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটক কমতে শুরু করেছে। সোমবার সকালেও অনেকে কুয়াকাটায় আসেন তবে মঙ্গলবার সেই সংখ্যাটা তলানীতে। এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট, মার্কেটসহ স্থানীয় ছাতা-বেঞ্চ, সি-ফুড এবং ফিশফ্রাই মার্কেট।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কুয়াকাটায় পর্যটকরা বৃষ্টি ও উত্তাল ঢেউ উপভোগ করেন, কিন্তু গত কয়েকদিনের অতিরিক্ত বৃৃষ্টিতে পর্যটকরা রুমে আবদ্ধ হয়ে পড়ছেন। তাই নতুন কেউ তেমন আসছেন না। আর যারা ছিলেন তারাও গন্তব্যে ফিরছেন।
পারভিন নামের এক পর্যটক বলেন, ‘আমরা সোমবার যখন কুয়াকাটায় আসি, তখনো বৃষ্টি ছিল। ভাবছিলাম আজ () হয়তো কমবে, তবে আবহাওয়া আরো খারাপ। বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে, তাই চলে যাচ্ছি।’
হোটেল সাউথ স্টারের পরিচালক মোহাম্মদ অপু বলেন, ‘আমাদের হোটেলে ২০টি রুম রয়েছে। গত সোমবারও ১০টি বুকিং ছিল, মঙ্গলবার মাত্র ৫টি বুকিং আছে তাও চলে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে কুয়াকাটা ট্যুরিস্টশূন্য হয়ে পড়বে।’
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘কুয়াকাটায় ১৭০টির বেশি আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা কম। ১০ শতাংশের কম হোটেল বুকিং আছে। তবে যারা আসছেন তারাও চলে যাচ্ছে। হোটেল-মোটেলগুলোতে বুকিং বাতিল হচ্ছে। বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত পর্যটকদের আগমন বাড়বে না।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন পুলিশ পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘অনেক পর্যটক ঢেউ দেখতে কুয়াকাটায় আসেন। অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ায় আমরা সৈকতে নামার ব্যাপারে সতর্ক করছি। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পর্যটকরা চলে যাচ্ছেন।’
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, ‘সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলার কুয়াকাটায় ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আকাশে মেঘ এবং মেঘের গর্জন বাড়তে পারে। আগামী আরো ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য