-->
শিরোনাম

তিস্তা নদীর চরে গড়ে উঠেছে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
তিস্তা নদীর চরে গড়ে উঠেছে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র
সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র ‘তিস্তা পাওয়ার প্ল্যান্ট’

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীর চরে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। ৬৫০ একর এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ সোলার প্যানেল। দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির যোগান দিতে সৌরবিদ্যুৎ খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে দেশের শীর্ষতম এ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। তিস্তা সোলার লিমিটেড নামে এ কেন্দ্রটি গড়ে তুলেছে বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড। সম্প্রতি এ প্রকল্পটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

জানা গেছে, ২০১৭ সালে সুন্দরগঞ্জের ওই দুর্গম চরে পরিত্যক্ত প্রায় ৬০০ একর জায়গায় ‘তিস্তা পাওয়ার প্ল্যান্ট’ নামে দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। তিস্তা নদীর এপারে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ এবং পাশেই রংপুরের পীরগাছা আর ওপারে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা অবস্থিত। এ তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী সংযোগস্থলে দেশের বৃহত্তম এ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটির অবস্থান।

 

এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে সুন্দরগঞ্জের তিস্তা পাড় থেকে বৃহত্তর রংপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে ১২২টি টাওয়ারের ১৩২ কিলোওয়াট ভোল্টের ৩৫ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। আরো নির্মাণ করা হয়েছে সাবস্টেশন, বসানো হয়েছে ইনভার্টারসহ সব ধরণের যন্ত্র। বন্যা, নদী ভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রক্ষায় নির্মাণ করা হয়েছে বাঁধ ও চলাচলের জন্য সাত কিলোমিটার সড়ক। যার সুবিধা পাচ্ছেন স্থানীয়রাও।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে উৎপাদিত বিদ্যুৎ। এ কেন্দ্র থেকে দিনে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে জাতীয় গ্রিডে। এরই মধ্যে রংপুর সফরে এসে উত্তরের মানুষে জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ হিসেবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব ব্যাপী জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে সৌরবিদ্যুৎ হতে পারে ভরসা। জ¦ালানি হিসেবে গ্যাস ও পরিশোধিত তেলের ওপর চাপ বাড়ায় বিশ্বব্যাপী সংকট শুরু হয়েছে। তাই উন্নত দেশে এখন সৌরবিদ্যুতের কথা ভাবছে।

 

এ বিষয়ে বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান শায়ান এফ রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটি রোডম্যাপ আছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে। পরিবেশ রক্ষা নিয়ে। সরকার এটি নিয়ে অনেক কাজ করছে। বেক্সিমকো অনেক খাতে পাইওনিয়ার। আমরা মনে করি, এই রিনিউয়াবল এনার্জি সেক্টর ভবিষ্যৎ জ্বালানির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে।

 

তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পে আমাদের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আরো সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চিন্তা করছি। এ প্রকল্প উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতেও ভূমিকা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও অবদান রাখবে বলে মনে করেন শায়ান এফ রহমান।

 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরুজা বারী বলেন, বিশ্বব্যাপী পরিবেশ রক্ষায় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেয়া হচ্ছে। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জ¦ালানি আমদানি কমাতে সরকারও এখাতে জোর দিয়েছে। যার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বেক্সিমকো।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version