ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় রেলওয়ে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে রেললাইনে গাছ ফেলে বাঁশের বেড়া দিলেন এক ভুক্তভোগী। উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের শূন্যরেখার পাশে এ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন শাহনুর সরকার নামের একজন জমির মালিক।
তিনি ওই ইউনিয়নের খারকোট এলাকার মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে। রোববার (১৩ আগস্ট) থেকে দেখা যায়, বাঁশের ও গাছের ডালপালা দিয়ে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইনের ওপর দু'পাশে লম্বা বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন তিনি।
ভুক্তভোগী শাহনুর সরকার বলেন, ‘আমি প্রবাসে ছিলাম, ফেরার পর অসুস্থতায় ভুগছি। আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পে আমার ২৬ শতাংশ জায়গা পড়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের সময় আমার শীবনগর মৌজায় ১৬৮ দাগের সাড়ে ৮ শতক ও ১৬৫ দাগের সাড়ে ১৭ শতকসহ দুই দাগে মোট ২৬ শতক জমি রেলওয়ে অধিগ্রহণ করে নেয়।
জায়গা দখল হয়েছে অনেকদিন হলো, রেললাইন তৈরির কাজ প্রায় শেষও হতে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জায়গার মূল্য এক টাকাও পরিশোধ করেনি কেও। প্রায় ৫ মাস যাবৎ আমি অসুস্থ। অসুস্থ শরীর নিয়ে রেলের বিভিন্ন দপ্তর, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমি অধিগ্রহণের পাওনা টাকার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেও কিছুই হচ্ছে না। এ বলে ওর কথা, সে বলে তার কথা; এসব দপ্তরে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে আমি হয়রান। তাই ক্ষোভে আমার যতটুকু জমি রেলের মধ্যে পড়েছে সেই জায়গায় বেড়া দিয়ে দিয়েছি। যদি আমার জমির মূল্য না দিয়ে ট্রেন চালানো শুরু করে তাহলে আমার শরীরের ওপর দিয়ে ট্রেন নিয়ে যেতে হবে।’
এ ব্যাপারে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সম্যাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলী রিপন শেখ বলেন, 'যে অংশে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে সেখানে আপাতত আমাদের কোনো কাজ চলছে না। মূলত আমরা ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে যখন কাজ শুরু করি তখন শাহনুর প্রবাসে ছিলেন। সেজন্য তার জমির দাম বুঝে পাননি।
তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শাহনুরকে তার জমির দাম বুঝিয়ে দেওয়া হবে।' প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়া আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে আগামী ২২ আগস্ট পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচলের কথা রয়েছে। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রী বহুল কাঙ্খিত রেলপথটির উদ্বোধন করবেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িায়ার আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত নির্মাণাধীন ডুয়েলগেজ রেলপথটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার। প্রকল্পের কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সম্যাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। এই রেলপথটি সরাসরি উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করবে বাংলাদেশকে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য