-->
শিরোনাম

কুতুবপুরের হাটে কোটি টাকার কলা বেচাকেনা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
কুতুবপুরের হাটে কোটি টাকার কলা বেচাকেনা
কুতুবপুরের কলার হাট

কুতুবপুরের ৫০ বছরের পুরোনো কলার হাট। হাটটি দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দিন যত যাচ্ছে ততই সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। হাটবার এলেই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। সপ্তাহে চার দিন হাটবার এলেই সরগরম হয়ে ওঠে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের কুতুবপুর বাজার।

 

রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলার ব্যাপারীরা এ হাট থেকে কলা কিনে বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে থাকেন। সম্প্রতি কুতুবপুরের কলার হাটটি উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় কলার হাট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ হাটে প্রতি সপ্তাহে প্রায় কোটি টাকার কলার কাঁদি বিকিকিনি হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন বাজার কমিটি।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, কলাচাষিরা সাইকেল, ভ্যান, অটো, পিকআপে করে কলার কাঁদি নিয়ে বিক্রি করতে এসেছেন। নানা জাতের এসব কলা কিনতে দূর-দূরান্তের ব্যাপারীরাও ভিড় জমিয়েছেন। চাষিদের সঙ্গে দরদাম নিয়ে কথা বলছেন। চাষিদের সঙ্গে দরদামে মিলে গেলে ব্যবসায়ীরা এসব কলা বিভিন্ন পরিবহনে করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের নানা প্রান্তে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়েছে। মধুপুর, ঘাটাইল, সখীপুর, কালিহাতীসহ পাহাড়ি এলাকায় কলার আবাদ বেশি হয়। এসব এলাকাতে বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ হয়। সাগর কলা, সরবি কলা, হিম সাগর, মিহির সাগর ও অমৃত সাগরসহ নানা জাতের কলা চাষ করেন চাষিরা।

 

কলা চাষিরা বলেন, এ বছর দামটা ভালো পাচ্ছি। প্রতি কাঁদি কলা চারশো থেকে ছয়শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অনন্য বছরের চেয়ে এবছর প্রতি কাঁদি কলা একশো থেকে দুইশো টাকা দাম বেশি। এ বছর কলা চাষিরা কাল চাষ করে লাভবান হচ্ছে। সার ও কীটনাশকের দাম কম থাকলে চাষিরা কলা বিক্রি করে আরো লাভবান হতো। ব্যাপারীরা জানান, প্রতি কাঁদি কলা দেড়শো থেকে আটশ টাকায় বিক্রি হয়। তবে কাঁদি, স্বাদ ও মানভেদে দাম ওঠানামা করে। ছোট আকারের কলা প্রতি কাঁদি দেড়শ টাকা, মাঝারি আকারের কাঁদি তিনশ টাকা, বড় আকারের কাঁদি সাড়ে চারশ থেকে আটশ টাকায় বিক্রি হয়। এ বছর কলার দাম একশ থেকে দুইশ টাকা বেশি। প্রতি সপ্তাহে কলার হাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কলা যাচ্ছে।

 

কুতুবপুর বাজারের ইজারাদার হাবিবুর রহমান বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে কলা কিনে থাকেন। কুতুব বাজারের কলার হাটের সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কলা কিনতে এই হাটে আসেন। এই হাটে টোল অন্য সব হাটের চেয়ে কম। আগে এই হাট দুদিন হতো এখন সপ্তাহ চার এই হাট হাট বসে।

 

তিনি আরো বলেন, সপ্তাহের শনি, রবি, মঙ্গল ও বুধবারের হাটে প্রায় কোটি টাকার কলা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। মূলত কলাচাষি ও ছোট ব্যবসায়ীরা এ হাটে কলা আমদানি করে থাকেন। এরপর তাদের কাছ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেগুলো কিনে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন।

 

কুতুবপুর বাজার কমিটির সহসম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারীরা কলা কিনতে আসেন। এই বাজারে থাকা খাওয়ার কোনো সমস্যা নাই। ঢাকাসহ আশেপাশের সকল জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় দিন দিন এ হাট জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই হাট আগে দুদিন হলেও এখন চারদিন হাট বসে। এই হাটে প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকার কলা বিক্রি হয়।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version