-->

সফল নারী উদ্যোক্তা হেনরী আমীন পপি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

সফল নারী উদ্যোক্তা হেনরী আমীন পপি
ক্যাপশান-নকশী কাঁথার কাজ করছেন নারীরা

নেত্রকোনা সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের কারলী গ্রামের সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন হেনরী আমিন পপি। তার প্রতিষ্ঠিত রাবেয়া ফ্যাশন হাউজে শাড়ী, ত্রি-পিচ, পাঞ্জাবী, বিছানার চাদরসহ বিভিন্ন কাপড়ে নকশী করা হয়। তার এখানে এলাকার অনেক নারীরা কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। স্বামীর রোজগারের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সী নারীরা। তবে এ ধরনের উদ্যোগে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন বিসিকের উপ- ব্যবস্থাপক মো. আকরাম হোসেন।

 

হেনরী আমিন পপির ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। বিয়ের পর স্বামীর সংসারে থেকে বাইরে বের হওয়া নিষেধ ছিল। আর সেই সকল বাধা পেরিয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষনের মাধ্যমে শিক্ষা নিয়ে তৈরী করেন রাবেয়া ফ্যাশন হাউজ। পূরণ হয়েছে অনেকদিনের স্বপ্ন। ১ শত ২০ জন নারীকর্মী কাজ করছে তার এখানে। কাপড়ে বিভিন্ন নকশা ও ছাপ তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। লাভবান হচ্ছেন অর্থনৈতিকভাবে। দরিদ্র সংসারে যোগান দিচ্ছেন বাড়তি টাকা। সেলাইয়ের কাজ করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থীরাও।

 

কারলী গ্রামের মোছা. বকুল, লিজা আক্তার, জেছমিন আক্তার, শিক্ষার্থী নাসরিনসহ অনেক নারী কর্মী বলেন, হেনরী আমিন পপির প্রতিষ্ঠিত রাবেয়া ফ্যাশন হাউজে শাড়ী, পাঞ্জাবী, ত্রি-পিচ, কোশন কভারসহ বিভিন্ন ধরনের হাত ব্যাগে দৃষ্টিনন্দন নকশী এবং কাপড়ে নানা ডিজাইনের ব্লক করা হয়। কাপড়ে বাহারী ডিজাইনের নকশী তৈরী করা হয়। স্বামীর রোজগারের পাশাপাশি নারীরাও স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এতে সংসারে বাড়তি আয় হচ্ছে। কমে যাচ্ছে দারিদ্রতা। শিক্ষার্থীরাও কাজ করে লেখাপড়ার খরচ যোগান দিচ্ছেন। ফলে গ্রামীণ সমাজে দ্রুত পরিবর্তন আসার সাথে সাথে অর্থনৈতিকভাবেও উন্নয়ন হচ্ছে। দেশে অবহেলিত নারীদের কর্ম সংস্থানে বিভিন্নভাবে সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে সরকার, এমনটিই প্রত্যাশা জেলাবাসীর।

 

নারী উদ্যোক্তা হেনরী আমিন পপি বলেন, ‘গ্রামের বধু হয়ে শহরে গিয়ে কাজ করা নিষেধ ছিল স্বামীর পরিবারের লোকজনের। আর শত বাধা পেরিয়ে সেলাই কাজে স্বাবলম্বী হয়ে স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। এক সময় গ্রামের সবাই আমাকে নিয়ে সমালোচনা করত। এখন আবার তারাই বলে আমি তাদের অনুপ্রেরণা। আমার ৩ হাজার ৫শত টাকার পুঁজি বর্তমানে ২৫ লক্ষ টাকায় দাড়িঁয়েছে। ইতিমধ্যে আমার দেশীয় পণ্য ৬৩টি জেলায় যাচ্ছে। দেশের বাহিরে স্পেন, কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার ব্রিজবেন, সুইডেনসহ অনেক দেশে যাচ্ছে আমার ফ্যাশন হাইজের তৈরী পণ্য। আমি চাই সমাজে অবহেলিত সকল নারীরা এভাবে এগিয়ে আসলে তারাও প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।

 

নেত্রকোনা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উপ-ব্যাবস্থাপক মো. আক্রাম হোসেন বলেন, পপির এখানে কাজ করে অনেক অবহেলিত নারী স্বাবলম্বীর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হচ্ছে। তবে তার মত অন্য নারী উদ্যোক্তদেরও সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version