-->
শিরোনাম

মাগুরায় পরিত্যক্ত জমিতে ধান চাষ হচ্ছে

মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় পরিত্যক্ত জমিতে ধান চাষ হচ্ছে
মাগুরায় ইটভাটার জমিতে ধান চাষ হচ্ছে

বছরের প্রায় ছয় মাস যে জায়গা পরিত্যক্ত পড়ে থাকত, উৎপাদন হতো না কোনো ফসল। প্রধানমন্ত্রীর আহব্বানে সেই জায়গাকে চাষের আওতায় এনে এ বছর প্রায় ৪০০ টন অতিরিক্ত চাল ও ৩৮৪ টন সবজি উৎপাদনের আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। এই অতিরিক্ত চাল ও সবজি একদিকে যেমন দেশের কিছু হলেও খাদ্য চাহিদা পূরণ করবে, অন্যদিকে কমিয়ে আনবে আমদানিনির্ভরতা। তাই দেশের সব জেলায় পড়ে থাকা ইটভাটার জায়গা যদি কাজে লাগানো যায় সেক্ষেত্রে দেশের খাদ্য ঘাটতি অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করেছে জেলা কৃষি বিভাগ।

 

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, জেলার ১০৩টি ইটভাটার মোট জায়গার মধ্যে ১৮১.৫৩ হেক্টর জায়গা রয়েছে চাষযোগ্য। বর্ষা মৌসুমে ইট তৈরি বন্ধ থাকলে এই জায়গাগুলো সাময়িকভাবে পড়ে থাকে প্রায় ছয় মাস। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে দেশের মানুষের ভোগান্তি কমাতে প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহব্বানেও সাড়া দিয়ে এই জায়গার মধ্যে প্রায় ১০৭ হেক্টর জমি চাষের আওতায় এনেছে জেলা কৃষি বিভাগ। পরিত্যক্ত এই জমিতে ধান ও বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ করে অতিরিক্ত প্রায় ৪০০ টন চাল ও ৩৮৪ টন সবজি উৎপাদনের আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। জেলায় গত মৌসুমে ২ লাখ ২৬ হাজার ১১৭ টন চাল ও ৪৬ হাজার ২১৪ টন সবজি উৎপাদন হয়েছিল যা এ মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা।

 

এর সাথে ইটভাটার পড়ে থাকা জায়গাগুলো কাজে লাগিয়ে এ বছর অতিরিক্ত যোগ হচ্ছে এই চাল ও সবজি। জেলার ইটভাটার ১০৭ হেক্টর সাময়িক পতিত জমির মধ্যে শ্রীপুর উপজেলায় রয়েছে ২৩ হেক্টর। যার মধ্যে এই মৌসুমে ১৯ হেক্টর জায়গা চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

 

শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের রায় নগর গড়াই নদী সংলগ্ন টপ টেন ও গড়াই ইটভাটায় প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে ধান ও ৫ বিঘা জমিতে সবজির চাষ করা হয়েছে। এই ২৫ বিঘা জমিতে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মণ ধান ও পাঁচ বিঘা জমিতে ২০ থেকে ৩০ মণ মিষ্টি কুমড়া, দুই থেকে তিন মণ ঢেঁড়স ও ৫ থেকে ৭২০ মণ লাউ। এই ধানও সবজি চাষ করতে কৃষকদের সর্বপ্রকার পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলে জানান শ্রীপুর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অলোক কুমার বিশ্বাস।

 

ইটভাটার মালিক হুমায়ুন রশিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। সেই ঘোষণার পর আমি আমার ইট ভাটায় প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছি। কৃষি বিভাগ এবং স্থানীয় কৃষকরা ফসল দেখে বলছে ভালো ফলন পাব এবার। আমি ভবিষ্যতেও এই চাষ অব্যাহত রাখব।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সুফি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না। সে নির্দেশনার পর আমরা দেখলাম আমাদের ইটভাটার জায়গাগুলো প্রায় ছয় মাস অনাবাদি পড়ে থাকে। যে জায়গার পরিমাণ প্রায় ১৮১.৫৩ হেক্টর । আমরা ইতিমধ্যে এই মৌসুম প্রায় ১০৭ হেক্টর জমি চাষের আওতায় এনেছি । সেখানে ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আগামীতে যে জায়গাগুলো চাষের আওতায় আনতে পারি নাই সেগুলো আনার চেষ্টা করব।

 

তিনি আরো বলেন, শুধু মাগুরাতে নয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এই উদ্যোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের সব ইটভাটার সাময়িক পতিত জমিগুলোকে যদি চাষের আওতায় আনা যায় সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন কৃষক উপকৃত হবে অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও অবদান রাখবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version