-->
শিরোনাম

ভাঙনের কবলে দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতু

বান্দরবান প্রতিনিধি
ভাঙনের কবলে দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতু
বান্দরবানে থানচির বড়মদকের ঝুলন্ত সেতু

বান্দরবানের থানচির বড়মদকে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সাঙ্গু নদীর ওপর নির্মিত হয়েছিল দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতু। নির্মাণের পর নদীর দুই পাড়ের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে তৈরি হয় মেলবন্ধন।

 

এছাড়া পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে সেতুটি। তবে মাত্র ২ বছর পার হতেই চলতি বছরের আগস্টের শুরুতেই হওয়া বন্যার পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেতুটি। কাজে অনিয়মের কারণে এমনটা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

 

স্থানীয়রা জানান, ২০২১ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যায়ে থানচি বড়মদক এলাকায় সাঙ্গু নদীর ওপর নির্মিত হয় দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতুটি। এটি নির্মিত হওয়ায় সীমন্তবর্তী সাঙ্গু নদীর দুই তীরের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে তৈরি হয় সেতুবন্ধন। এটি শুধু স্থানীয় বাসিন্দাই নয়, জেলায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছেও ছিল আকর্ষণীয়। কিন্তু সেতুটি আগস্টের শুরুর দিকে হওয়া বন্যার পানির স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার ও কৌশলগত ত্রুটির কারণে ভেঙে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি। মংহাই চিং মারমা বলেন, সেতুটি নির্মিত হওয়ায় বড়মদক দুইপাড়ার মধ্যে সেতুবন্ধন হয়েছিল। তবে এবারের বন্যায় পানির স্রোতে সেতুটি ভেঙে গেছে। সেতুর পিলারও ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

 

থানচির বাসিন্দা মংবাচিং মারমা বলেন, বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতুটি ছাড়াও থানচি সদরে একটি, থানচির বলিপাড়ায় একটি, রুমা সদরে একটি, রোয়াংছড়ির বেতছড়ায় একটি ও বান্দরবান সদরে তিনটি সেতু রয়েছে। এ বন্যায় কোনো সেতুর ক্ষতি হয়নি। তবে এ সেতুটি কেন ভেঙে গেল তা খতিয়ে দেখার দাবি জানাই।

 

পার্বত্য জেলা পরিষদের তথ্যমতে, ২০১৯-২১ এ দুই অর্থবছরে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রকৌশল বিভাগের এক কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে থানচির রেমাক্রী ইউনিয়নের বড় মদকে সাঙ্গু নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় ৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১ দশমিক ৮মিটার প্রস্থের দৃষ্টিনন্দন এ ঝুলন্ত সেতুটি। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঝুলন্ত সেতু হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিল। ঠিকাদার মংউয়েনু মারমা ও থানচির রেমাক্রি ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি কাজটি বাস্তবায়ন করেন।

 

সেতুটির ঠিকাদার মংউয়েনু মারমা বলেন, এবারের বন্যায় সেতুটির প্রায় তিন ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ওই সময় পানির সঙ্গে আসা গাছ ও বাঁশের আঘাতে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া কাজে কোনো প্রকার অনিয়ম হয়নি। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, সেতুটি নির্মাণে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি।

 

এবার যে বন্যা হয়েছে তা অতীতে দেখা যায়নি। মূলত বন্যার পানির স্রোত ও ভাসমান নানা ধরনের গাছের ভার বহন করতে না পেরেই সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। থানচি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকার কারণে এখনো সেতুটি দেখতে যেতে পারিনি। তবে আমরা এরই মধ্যে এটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আশা করছি, বরাদ্দ পেলে সেতুটি সংস্কার কাজ শুরু করতে পারব।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version