-->
শিরোনাম

মা-ছেলের শিকলেবাঁধা জীবন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মা-ছেলের শিকলেবাঁধা জীবন
ক্যাপশন: শিকলেবাঁধা মা-ছেলে

হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে মা-ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাও আবার নিজের শরীরের সঙ্গে। অবিশ্বাস্য এই ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায়। রহিমা খাতুন দুই চোখে দেখতে পারেন না। শরীরে ক্ষতচিহ্নের দাগ। সঙ্গে প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে যাযাবর জীবন কাটছে তার। যেখানেই রাত হয়, সেখানেই থেকে যান। শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ভিক্ষা করেই চলে মা-ছেলের সংসার।

 

রহিমা খাতুনের ৮ বছরের শিশু সন্তান আব্দুর রহমানও মানসিক প্রতিবন্ধী। ছেলেকে হারানোর ভয়ে তাকে শিকলে বেঁধে রাখেন সব সময়। রাতে ঘুমানোর সময়ও মায়ের শরীরের সঙ্গে বেঁধে রাখতে দেখা গেছে। মা-ছেলের শিকলবন্দি এই জীবন দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

 

রহিমা খাতুনের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের জয়নাল হোসেনের মেয়ে। রহিমা খাতুনের বিয়ে হয়েছিল। তবে দীর্ঘদিন খোঁজখবর নেন না তার স্বামী। প্রতিবন্ধী এই শিশুকে নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ান তিনি।

 

হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন ইদ্রিস আলী জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রহিমা খাতুন গিয়েছিলেন চিকিৎসা নিতে। রাতে না খেয়েই হাসপাতালের মেঝেতে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমানো অবস্থায় ছেলেকে শিকল দিয়ে নিজের শরীরের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন। বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান।

 

রহিমা খাতুন জানান, তার স্বামী কোনো খোঁজখবর নেন না। প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে তিনি ভিক্ষা করেন। তার ঘর বাড়ি নেই, রাস্তায় থাকেন। দুই চোখে দেখতে পান না। বিভিন্ন রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়

 

হাসপাতালে এসেছিলেন ওষুধ নিতে। রাত হয়ে যাওয়ায় না খেয়ে হাসপাতালেই ঘুমিয়ে ছিলেন। ছেলের সহায়তায় চলাফেরা করেন তিনি।

 

তিনি আরো জানান, তিনি সরকারের কাছে একটি ঘরের দাবি করেন। বুধবার দুপুরে ওষুধ পেয়েছেন হাসপাতাল থেকে।

 

ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু জানান, তিনি ওই মহিলাকে চিনতে পারেননি। ওই মহিলার বাড়ি তার ইউনিয়নে না।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version