নগরীর পতেঙ্গা থানার চরপাড়ায় শতবর্ষী তাজিয়ার পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন স্থানীয় দুই ব্যক্তি। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরে আসার পর ওই দুই ব্যক্তিকে জরিমানার পাশাপাশি পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়। তবে দেড় বছরেও পরিবেশ অধিদপ্তরের এই আদেশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। সরিয়ে নেয়া হয়নি অবৈধ স্থাপনাগুলোও।
সরেজমিনে দেখা যায়, চরপাড়া রাস্তার মুখে সড়কের পাশেই তাজিয়ার পুকুরের অবস্থান। ময়লা-আবর্জনায় ভরা পুকুরের এক অংশে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন এভাবে পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে পুকুরটি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা। পরিবেশ অধিদপ্তরকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তাজিয়ার পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন নুরুর আবছার ও আবু বক্কর। বিষয়টি জানতে পেরে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। পুকুর ভরাটের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুজনকে মোট ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার পাশাপাশি পুকুরের ভরাট করা অংশ নিজ নিজ খরচে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার আদেশও দেয় পরিবশ অধিদপ্তর। ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি এ আদেশ প্রদান করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কর্যালয়ের তৎকালীন পরিচালক ইশরাত রেজা।
আদেশে বলা হয়, দক্ষিণ পতেঙ্গার চরপাড়া রাস্তার মুখ এলাকায় পুকুরটি সরেজমিন পরিদর্শন করে পুকুর ভরাটের সত্যতা পাওয়া গেছে। পুকুরটি ভরাটের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি হয়েছে। ১০১৫ বর্গফুট পুকুর ভরাটের অপরাধে নুরুল আবছারকে ৩৪ হাজার ৫৯ টাকা এবং ২৭০ বর্গফুট ভরাটের অপরাধে মোহাম্মদ আবু বক্করকে ১৪ হাজার ৬৫৭ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, জরিমানার পাশাপাশি পুকুরের ভরাটকৃত অংশ নিজ খরচে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আনতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া সেখানে কোনো স্থাপনা করা যাবে না। তবে আদেশের দেড় বছর অতিবাহিত হলেও পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়নি। পুকুরটি বাঁচাতে পরিবেশের কাছে আবেদন করেছিল স্থানীয় এস এম জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। দেড় বছরেও পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে না আনার বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবহিত করেছেন আবেদনকারী জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট পরিদর্শককে দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেয়ার পাশাপাশি পূর্বের আদেশ বাস্তবায়ন না হলে নিয়মিত মামলা করার আদেশ দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস। পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণের বিষয়টি তদন্ত করছেন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন।
সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পরিচালক মহোদয়ের আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য