বাগেরহাট সদর উপজেলার রহিমাবাদ স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে ইফটিজিংএর অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে রবিবার (৩রা সেপ্টেম্বর) অত্র প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক আল মামুন রহিমাবাদ স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক এবং আইসিটি বিভাগ পরিচালনা করতেন।
জানা যায়, রহিমাবাদ স্কুল এন্ড কলেজের শাখা শিক্ষক শেখ আল মামুন ফেসবুকে নিজের ও "ইংরেজি শিক্ষক" নামে একাউন্ট খুলে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রীকে অশ্লীল ম্যাসেজ প্রদান করতেন। বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষক আল মামুনকে গত ২২ আগস্ট এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়। সন্তোষ মূলক জবাব না দেওয়ায় দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর জন্য পুনরায় আরও ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় তাকে।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সে সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের সুপারিশ করেন। এমতাবস্থায় গত ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে বিদ্যালয় মিলনায়তনে এলাকাবাসী শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষক শেখ আল মামুনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
রহিমাবাদ স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নাসির হায়দার জানান, বিদ্যালয়ের শাখা শিক্ষক শেখ মোঃ আল মামুনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তাকে কারণ দর্শানোর জন্য সাত দিন এবং পরবর্তীতে আরো ৭২ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়। সে কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছে। তদন্ত কমিটি তাকে বরখাস্তের সুপারিশ করেছে। ৩রা সেপ্টেম্বরে বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান এবং রহিমাবাদ স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বেগ ইমদাদুল হক বাচ্চু বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে এই বিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে। কোনভাবেই আমরা বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করতে পারিনা। অপরাধী যেই হোক তাকে কোন ছাড় নয়। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও অনেক অভিযোগ শুনেছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক এলাকাবাসী এবং পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তমতে শিক্ষক আল মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক শেখ আল মামুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ফেসবুকের যে আইডি দিয়ে ছাত্রীদের ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে ওই আইডি আমার নয়। তারা উদ্দেশ্য মূলক ভাবে আমাকে হয়রানি করছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম মোর্শেদ বলেন, বিষয়টি লোকমূখে শুনেছি। এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য