-->
শিরোনাম

খোলা আকাশের নিচে বাস করছে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
খোলা আকাশের নিচে বাস করছে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে একটি পরিবার

নেত্রকোনার পাঁচ উপজেলায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। রোববার গভীর রাতে বাড়িঘর ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোহনগঞ্জে ঝড়ের সময় নিখোঁজ জেলে দুলাল মিয়ার (৫৫) লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

 

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, কলমাকান্দা, নেত্রকোনা সদর ও দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে রোববার রাত ৩টার দিকে ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত এবং অসংখ্য গাছ উপরে ও ভেঙে পড়ে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যায়। গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

 

মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঝড়ের সময় জেলার মোহনগঞ্জের ডিঙাপোতা হাওরের পাশে গোড়াউত্রা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে দুলাল মিয়া নামে এক জেলে নিখোঁজ হন। তিনি গোড়াউত্রা গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সোমবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ সোমবার বিকেলে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গাপুরের বিরিশিরি পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।

 

মোহনগঞ্জের গাগলাজোর গ্রামের চয়ন চৌধুরী বলেন, ঝড়ে আমাদের হাওর এলাকায় খুব ক্ষতি হয়েছে। বহু ঘর বাতাসে পড়ে গেছে। অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে। বিদ্যুৎ এমনিতেই থাকে না। ঝড়ের পর থেকে গেছে, আর খবর নেই।

 

দুর্গাপুরের বিরিশিরি ইউনিয়নের গাভিনা গ্রামের আবদুল হাসিম জানান, রাতে হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বাতাস বইতে থাকে পরক্ষণেই তান্ডব শুরু হয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বসত ঘরটি ভেঙে যায়। জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয় পরিবার নিয়ে।

 

বিরিশিরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন, আমার ইউনিয়নে অনেক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে পরিষদের সদস্যদের বলা হয়েছে।

 

দুর্গাপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে খুঁটি হেলে পড়েছে। এ ছাড়াও তারের ওপর গাছ-ডালপালা ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে।

 

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় আটশ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউটিন বরাদ্দের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version