-->
শিরোনাম

প্লাস্টিক বর্জ্যে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে’ দিঘিগুলো

অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম)
প্লাস্টিক বর্জ্যে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে’ দিঘিগুলো
উপজেলা সুপার মার্কেট, ন্যাশনাল মার্কেট ও আফরোজা প্লাজাসহ তিন মার্কেটের মিলনস্থলে থানা সংলগ্ন দিঘির দক্ষিণ পাড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়

সীতাকুন্ড পৌর এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন কিংবা নিত্যপণ্যের প্লাস্টিকের মোড়কে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ভেঙে পড়ছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, উর্বরতা হারাচ্ছে মাটি, বাতাসে ছড়াচ্ছে বিষ। পৌর সদরস্থ দিঘিগুলোর পাড়ে তাকালে মনে হয় সবাই যেন প্লাস্টিক বর্জ্য কিংবা ময়লা-আবর্জনা ফেলতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।

 

উপজেলা সুপার মার্কেট, ন্যাশনাল মার্কেট ও আফরোজা প্লাজাসহ তিন মার্কেটের মিলনস্থলে থানা সংলগ্ন দিঘির দক্ষিণ পাড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ডিটি রোড সংলগ্ন দেওয়ান দিঘির পূর্ব পাড়েও ফেলতে দেখা যায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বর্জ্যগুলো। পলিথিনে মোড়ানো ময়লা-আবর্জনায় বর্জ্যগুলো পচে-গলে উৎকট দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। সব মিলিয়ে প্লাস্টিক কিংবা পলিথিনের ব্যাপক ব্যবহারে বিপর্যস্ত পরিবেশ। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান ছাড়াও প্লাস্টিকের বিকল্প পরিবেশবান্ধব মোড়ক ব্যবহারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য নিক্ষেপে বিধিনিষেধ আরোপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

 

সীতাকুন্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদারুল আলম বলেন, দিঘিতে নিক্ষেপ করা প্লাস্টিক ও পলিথিন অপচনশীল হওয়ায় পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। দূষিত হচ্ছে মাটি-পানিসহ সামগ্রিক পরিবেশ।

 

১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পৌরসদরস্থ সমবায় মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. আবুল হাসেম চৌধুরী বলেন, আবাসিক এলাকার গৃহস্থালির বর্জ্য, বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরাঁসহ পৌরসদরস্থ বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্লাস্টিক মোড়ানো মেডিসিন বর্জ্য থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধে জনসাধারণের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ছাড়াও মশার প্রজননের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর হেপাটাইটিস-বিসহ মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগীদের ব্যবহৃত মেডিসিন সামগ্রী যত্রতত্র নিক্ষেপে পশু-পাখি কিংবা বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে জনস্বাস্থ্য। যত্রতত্র পলিথিন নিক্ষেপের ফলে মারাত্মক দূষিত হচ্ছে বাতাস, মাটি ও পানি। ফলে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ চর্মরোগে। ধ্বংস হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

 

সীতাকুন্ড সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লেফটেন্যান্ট মো. দিদারুল আলম বলেন, বাজারে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ডাস্টবিন থাকা সত্তেও অসচেতন জনসাধারণের একটি অংশ পৌর সদরস্থ দিঘিগুলোর পাড়ে কিংবা যত্রতত্র প্লাস্টিকসহ অন্যান্য বর্জ্য নিক্ষেপ করছে। তাতে দিন দিন ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে পৌরসদরস্থ দিঘিগুলো।

 

সীতাকুন্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বদিউল আলম বলেন, পৌর এলাকায় চাহিদামতো ডাস্টবিন রয়েছে। ডাস্টবিনগুলো থেকে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জনসাধারণের একটি অংশ নির্দিষ্ট ডাস্টবিনের বাইরে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলছে।

 

নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলতে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমসহ পৌরবাসীর সহায়তা কামনা করেন তিনি।

মন্তব্য

Beta version