খালের ওপর ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু। সেতুটির এক পাশ ভেঙে বসে পড়েছে। নির্মাণের দুই বছরের মাথায় ২০২০ সালে সেতুটি ভেঙে যায় এবং দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটিও স্রোতে ভেসে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েছে সেতু দিয়ে চলাচলকারী কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সারা বছর তাদের নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়।
দৌলতপুর সদর চকমিরপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর খালেক মাস্টারের বাড়ির সামনে খালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ভেঙে পড়ায় দৌলতপুর, চকহরিচরণ, রামচন্দ্রপুর, খলসি ও জিয়নপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষকে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে নির্মিত ভাঙা সেতুটি মেরামত না হওয়ায় ওই সেতু দিয়ে চলাচলকারী মানুষজন কয়েক কিলোমিটার ঘুরে অন্য সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৫ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মাণ করে মেসার্স এল রহমান নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দৌলতপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সেতুটির নির্মাণ তত্ত্বাবধান করে। ২০১৮ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্তু দুই বছরের মাথায় ২০২০ সালের বন্যায় সেতুর উত্তর পাশের অ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল দেবে ভেঙে যায় সেতু। এরপর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ভাঙা সেতু সংস্কার কিংবা ওই খালের ওপর নতুন কোন সেতুর ব্যবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ।
চকহরিচরণ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেতুটি ভেঙে পড়ে। সেতু ভাঙার পর থেকে দুই বছর ধরে স্থানীয়রা দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দ্রুত সেতুটি সংস্কার অথবা নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
চকমিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, খালের আয়তনের তুলনায় সেতুর দৈর্ঘ্য অনেক কম। ঠিকাদার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার নিজের লোক। নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করায় পানির স্রোতে মাটি ধসে সেতুটি ভেঙে পড়ে। সেতু ভাঙার পর আমি একাধিক বার পিআই ও অফিস ও এলজিইডি অফিসকে জানিয়েছি। তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। খালের ওপর দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোমিনুর রহমান বলেন, ২০২০ সালের বন্যায় খালে পানির প্রবল স্রোতে সেতুর নিচে ও দুই পাশের মাটি সরে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে। আগের সেতুটি ৪০ ফুট লম্বা ছিল, এখন খালের দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় বড় সেতু নির্মাণ করতে হবে। ৪০ ফুটের বড় সেতু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় পড়ে না।
আমি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে কথা বলেছি তারা নতুন সেতুর ব্যবস্থা করবে।
ভোরের আকাশ
মন্তব্য